নির্যাতিত রোহিঙ্গা, চীনের বাণিজ্যিক স্বার্থ ও বাংলাদেশের উদারতা

রিয়াজুল হক

 

বর্তমান সময়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু। রোহিঙ্গারা বিশ্বের অন্যতম নিগৃহীত জাতি। নিজের দেশ থেকেই তারা বিতাড়িত। মিয়ানমারকে যেহেতু রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ বললাম, তাই রোহিঙ্গাদের অতীত ইতিহাস একটু ঘেঁটে দেখা দরকার। উইকিপিডিয়ায় প্রদত্ত তথ্যমতে, অষ্টম শতাব্দীতে আরবদের আগমনের মধ্য দিয়ে আরাকানে মুসলমানদের বসবাস শুরু। আরব বংশীয় এই জনগোষ্ঠী মায়্যু সীমান্তবর্তী অঞ্চলের (বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কাছে) চেয়ে মধ্য আরাকানের নিকটবর্তী ম্রক-ইউ এবং কাইয়্যুকতাও শহরতলিতেই বসবাস করতে পছন্দ করতো। এই অঞ্চলে বসবাসরত মুসলিম জনপদই পরবর্তীকালে রোহিঙ্গা নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহাঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর চরম বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ ব্যক্তি সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে, রোহিঙ্গারা কোনো ভাসমান জাতি নয়। হাজার বছরের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে আরাকানের সঙ্গে। অথচ নিজের দেশেই তাদের গণহত্যা করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি সব জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবিবাহিত মেয়েরা হচ্ছে ধর্ষণের শিকার। কোলের শিশুকে আছড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অমানুষিক নির্যাতন করে রোহিঙ্গা পুরুষদের মেরে ফেলে কেটে টুকরা টুকরা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রবেশকারী রোহিঙ্গারা যেন পরবর্তীকালে মিয়ানমারে ফিরে যেতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে। কতটা ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড। অথচ বিশ্ববিবেক এখানে নির্বাক, যেন যা খুশি তা-ই করার অনৈতিক বিস্তর স্বাধীনতা তাদের রয়েছে।

আবদুল আজিজ নামে একজন রোহিঙ্গা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত হন। বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত তার সেই নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরা হলো ‘সেদিন ছিল বুধবার। বিকালে আসরের নামাজ পড়তে বের হয়েছি। সে সময় আমাকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আমার বাড়ি রাখাইনের গারোতো বিলে। বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। চোখ খুললে বুঝতে পারলাম আমাকে একটা ‘গ্যারানের টেরায়’, যাকে বলা হয় ‘গোয়ালঘরে’ নিয়ে রাখা হয়েছে। দেখলাম ঘরভর্তি মানুষ। আমার মতোই তাদেরও ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে আমাদের গরুর রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। যখন বেঁধে রেখেছিল তখন দুজন পাহারা দিয়েছে, কারোর বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। প্রচণ্ড মারধর করে আমাকে। তারা মিয়ানমারের ভাষায় বলছিল, লো কালা, অর্থাৎ তোরা আমাদের দেশি না, তোরা বাঙালি, তোরা ওখানেই চলে যা। আমার সামনে কয়েকজনকে জবাই করেছে, আবার কাউকে গুলি করে মেরেছে। গুলি করার পর তখনও যদি সে নড়তে থাকে, তাহলে তাকে জবাই করে দেয়। পাহারাদাররা যখন দরজা থেকে সরে গেছে তখন তাদের অবস্থান দেখে আমি পালিয়ে আসি। আমাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল আসরের সময়, আর আমি পালিয়ে আসি এশার সময়। আমি যখন ওখান থেকে বের হয়ে আসি যাদের তখনও হত্যা করেনি তাদের সবার হাত-পা বাঁধা ছিল। এরপর কী করেছে আমি জানি না। আমি যখন এসেছি তখনও ওখানে অনেক মানুষ ছিল, শুধু ছিল পুরুষ মুসলিম, কোনো মহিলা ছিল না। আমি যখন বাড়ি ফিরে আসি তখন দেখি আমার ঘর আগে যেরকম ছিল সেরকম আর নেই। আমার বাড়ি বোমা মেরে জ্বালিয়ে দিয়েছে, নাকি ম্যাচের আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছে, সেটা আমি জানি না; কিন্তু আমার প্রতিবেশীরা বলেছে, বোমা মেরে জ্বালিয়ে দিয়েছে। এর পর থেকে আমার মা-বাবার সঙ্গে দেখা হয়নি, বাংলাদেশে এসেও তাদের খোঁজ পাইনি। ওখানে মুসলিমের কোনো দাম নেই, খাবার পানি দেয় না। ভয়ে-আতঙ্কে আমার গলা শুকিয়ে আসছিল। বন্দি অবস্থায় দুই-আড়াই ঘণ্টা ছিলাম। তখন অন্যদের জিজ্ঞেস করেছি, এখানে কোনো খাবার পানি দেয় কি না। তারা বলেছে, কোনো খাবার বা পানি দেয় না। ওখানে আমার মতো যুবক যারা ছিল, তাদের আগেই ধরে নিয়ে গেছে। তাদের মেরে ফেলেছে, কেটে ফেলেছে। ওখানে যুদ্ধ করছে এমন কোনো রোহিঙ্গা আমরা পাইনি। ওখানে যুদ্ধ করার মতো লোক আছে বলে আমার মনে হয় না।’

রাখাইন সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার অভিপ্রায়, কিংবা জাতিগত দাঙ্গার কারণ আপাতভাবে যে দৃষ্টিকোণই থাক না কেন, মূলত রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা কয়েকটি শক্তিশালী বাণিজ্যিক স্বার্থের বলিতে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে যে, রোহিঙ্গাদের অকাতরে নিধন করার নেপথ্যে শক্তিশালী চীনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। রাখাইন রাজ্যে রয়েছে চীনা বিনিয়োগে কাইয়ুকফাইয়ু নামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যমতে, এ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তিনটি বড় প্রকল্প রয়েছে, যেগুলোর প্রতিটির সঙ্গেই চীনের স্বার্থ জড়িত। প্রথমত, কাইয়ুকফাইয়ুর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হচ্ছে গভীর সমুদ্রবন্দর। চলতি বছরের মে মাসে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, সিটিক কনসোর্টিয়ামে তিনটি বড় চীনা কোম্পানি ও থাইল্যান্ডের একটি কোম্পানি রয়েছে। এই বন্দরটির ৭০-৮৫ শতাংশ মালিকানা চেয়েছে সিটিক কোম্পানি। বাকি অংশের মালিকানা থাকবে মিয়ানমার সরকারের কাছে। অঞ্চলটিতে একটি বন্দর রয়েছে, যেটি পুনর্নির্মিত করলে তা চীনের জন্য কৌশলগভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পাকিস্তানের গোয়াদর ও শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরের সঙ্গে সম্পর্কিত হবে। এখন চীনকে তেল আমদানি করতে হয় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত সমুদ্রপথ মালাকা প্রণালি দিয়ে। বন্দরটি হলে এই প্রণালি এড়িয়ে যেতে পারবে চীন। দ্বিতীয়ত, রাখাইনের উপক‚ল থেকে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইয়ুনান প্রদেশ পর্যন্ত ৭৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ থেলং মিয়ানমার-চীনা তেল ও গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প চালু হয়েছে। পাইপলাইনটির ৫১ শতাংশ মালিকানা চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এবং মিয়ানমারের অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের ৪৯ শতাংশ। এই পাইপলাইন দিয়ে ২২ মিলিয়ন টন তেল পরিবহন করা হবে। এসব তেল আমদানি করা হয় আরব দেশ থেকে। তৃতীয়ত, রাখাইনে সিটিক কনসোর্টিয়াম দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এই প্রকল্পের ৫১ শতাংশ মালিকানা সিটিক কোম্পানির। ২০১৬ সালের শুরুতে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। ২০-৩০ বছরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হতে পারে। ১০০ হেক্টর এলাকাজুড়ে শিল্পাঞ্চলটি গঠিত হচ্ছে। প্রথম ধাপে কৃষি, ইকোট্যুরিজম এবং শিল্প-কারখানা স্থাপন করা হবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বাণিজ্যিক স্বার্থের বলি হচ্ছেন রোহিঙ্গারা। নিজ দেশ থেকে তারা হচ্ছেন বিতাড়িত। এছাড়া অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে যেসব দেশ সংশ্লিষ্ট, তারাও চাইবে না এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসুক।

আন্তর্জাতিক সূত্রমতে, সোয়া চার লাখের বেশি মানুষ প্রাণ বাঁচাতে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে। কোটি টাকার মালিক অনেক রোহিঙ্গা চোখের নিমেষেই পথের ফকির। যে যার মতো পারেন পাহাড় ডিঙিয়ে, নদী পার হয়ে চেষ্টা করছেন বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে। কারণ বাংলাদেশে প্রবেশ করলে বেঁচে থাকতে পারবেন। নির্যাতনের শিকার হতে হবে না। আর বাংলাদেশ, নামেই শুধু ছোট দেশ, হৃদয়টা যার আকাশের মতো। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে শত সমস্যা সত্তে¡ও শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং এখনও দিয়ে যাচ্ছেন, এমন নজির বর্তমান বিশ্বে খুব একটা নেই। তিনি প্রয়োজনে খাবার ভাগ করে খাওয়ার কথাও বলেছেন। এরপর রয়েছে আমাদের সাধারণ মানুষ। কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই, কেউ জোর করে বলেননি রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতেই হবে। তারপরও শুধু মানবিক কারণে যে যেমন পারছেন, সাহায্য করছেন নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের। স্ত্রীর হাতখরচের জমানো টাকা দিয়েও সহায়তা করছেন কেউ কেউ। সর্বস্তরের মানুষ সম্পূর্ণ মানবিক কারণে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। রাতদিন উজাড় করে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। দল-মত নির্বিশেষে সবাই ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন রোহিঙ্গাদের। এটাই এদেশের মানুষের উদারতা।

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সদর দফতরে ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ প্রস্তাব তুলে ধরেন এক. অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও জাতিগত নিধন নিঃশর্তে বন্ধ করা। দুই. অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা। তিন. জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত রাখাইনের সব নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে হবে। এজন্য মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি করা যেতে পারে। চার. রাখাইন রাজ্য থেকে জোর করে বিতাড়িত সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। পাঁচ. রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কফি আনান কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে বাস্তবায়ন করা।

প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই। রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে। প্রকাশিত তথ্যমতে, ইতোমধ্যে মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ-সহায়তা দিতে টুইটারে আহবান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ত্রাণ পাঠানোর ঠিকানা: এম মাহিদুর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার, নম্বর: ০১৫৫৬৬৪০১০১; জনাব নাসের, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নম্বর: ০১৭৩২৫৯২৩২১। এ ছাড়া কেউ চাইলে সরাসরি অ্যাকাউন্টে সহায়তা করতে পারবেন। এর ঠিকানা: হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাসিসট্যান্স টু দ্য মিয়ানমার ইললিগ্যালি মাইগ্রেটেড রোহিঙ্গা। নম্বর: ৩৩০২৪৬২৫, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, কক্সবাজার শাখা। প্রশাসনের মাধ্যমে বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়া কেউ চাইলে এ ঠিকানায় ত্রাণ সহায়তা দিতে পারেন। ঠিকানা: দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কক্সবাজার।

মিয়ানমারের নির্যাতিত নাগরিকদের যেভাবে এদেশের সর্বস্তরের মানুষ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তা অবশ্যই ইতিহাস হয়ে থাকবে। আয়তনে ছোট একটি দেশ বাংলাদেশ, কিন্তু হƒদয়টা বিশাল। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সাধ্য অনুযায়ী সহায়তা করে চলেছেন। তবে এই বিষয়ের দ্রুত সমাধান প্রয়াজন। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এটা বাংলাদেশের দুর্বলতা নয়, উদারতা। রোহিঙ্গারাও তাদের নিজের দেশে ফিরে যেতে চান। এখানে বিশ্বনেতাদের কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে হবে। নির্যাতনের শিকার না হয়ে রোহিঙ্গারা যাতে নিজের দেশে ফিরে গিয়ে বসবাস করতে পারেন, সেটাই সবার কাম্য।

 

উপপরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

riazul.haque02@gmail.com

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০