নিষেধাজ্ঞার আরজি খারিজ করলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কে হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালিখির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে রাজি হলেন না সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল শুক্রবার এ-সংক্রান্ত এক আবেদনের জবাবে প্রধান

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আমরা কখনও কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করব না।’ তিনি বলেন, তার এজলাসে এ-সংক্রান্ত যেসব মামলা হয়েছে, সে বিষয়ে শিগগিরই রায় জানানো হবে।

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতি ও কারচুপি করে অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির যে অভিযোগ হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনে আনা হয়েছে, তার জেরে ওই শিল্পসাম্রাজ্যে বিরাট ধস নেমেছে। সেই ধাক্কা এই শিল্পগোষ্ঠী এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। জানা যায়, ভারতীয় জীবনবিমা করপোরেশন (এলআইসি) যে দামে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কিনেছিল, বর্তমান দাম তার নিচে নেমে গেছে।

হিনডেনবার্গের অভিযোগের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি এবং সেজন্য সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের নিয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব সরকার মেনে নেয়নি। সংসদে সরকার এ নিয়ে আলোচনায়ও রাজি হয়নি। বিরোধীদের তোলা কোনো প্রশ্নের জবাবও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেননি। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা করা হয়।

মামলাকারীদের অন্যতম আইনজীবী এমএল শর্মার আরজি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট রায় না দেয়া

পর্যন্ত গণমাধ্যমে এ বিষয় নিয়ে কিছু লিখতে বারণ করা হোক। কারণ গণমাধ্যম উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। আইনজীবী শর্মা ওই আরজি নিয়ে জোরাজুরি করলে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কোনো যুক্তিগ্রাহ্য ও গ্রহণযোগ্য পরামর্শ দিন। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ নয়।’

প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিংহ ও বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালার এজলাস এরই মধ্যে এ-সংক্রান্ত একগুচ্ছ আবেদন শুনেছেন। মোট চারটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি একসঙ্গে হচ্ছে। এম এল শর্মার আরজি হিনডেনবার্গের বিরুদ্ধে তদন্ত করার। আইনজীবী বিশাল তিওয়ারির আরজি, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিনডেনবার্গ যেসব গুরুতর অভিযোগ এনেছে, তার তদন্তের জন্য অবসরপ্রাপ্ত কোনো বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়া হোক।

কংগ্রেস নেতা জয়া ঠাকুরের মামলায় দাবি, সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত কোনো বিচারপতির তত্ত্বাবধানে আদানির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হোক। মুকেশ কুমারের করা চতুর্থ মামলায় বলা হয়, সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়ে আদানির বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারচুপির তদন্ত করা হোক, যা তদারকি করবেন সুপ্রিম কোর্টের কোনো সাবেক বিচারপতি।

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে সর্বোচ্চ আদালতকে বলা হয়েছিল, মুখবন্ধ খামে অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন বিচারপতির নাম সরকার সুপারিশ করবে। তাদের মধ্য থেকে সুপ্রিম কোর্ট কাউকে বেছে নেবেন। কী কী বিষয় তদন্ত করা হবে, সরকার তাও ঠিক করে দেবে। তবে কিছুতেই এমন কিছু করা যাবে না, যাতে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রকেরা

ব্যর্থ প্রতিপন্ন হয়। সরকারের এসব শর্ত ও সুপারিশ সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেন। প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, মুখবন্ধ খাম গ্রহণ করার অর্থ হবে কমিটির নিরপেক্ষতা না থাকা। মানুষ মনে করবেন,

সরকারই সব ঠিক করে দিচ্ছে। ওটা সরকারের গড়ে দেয়া কমিটি। তিনি বলেছিলেন, সর্বোচ্চ আদালত স্বচ্ছতা চান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০