এস এম রুবেল, মহেশখালী: মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে দীর্ঘ ২২ দিন মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলেন জেলেরা। গত ৭ অক্টোবর সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর অলস সময় পার করছিলেন কক্সবাজারের উপকূলে বসবাস করা জেলে সম্প্রদায়। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উঠেছেন তারা। ফলে আজ দিবাগত রাত ১২ টার পর থেকে সমুদ্রে মাছ ধরার পুরোনো উৎসবে মেতে উঠবেন। এমনটি জানিয়েছেন ট্রলারের মাঝিমাল্লারা।
জেলেরা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে মাছ আহরণের উদ্দেশ্যে সাগরে রওনা দেবে তারা। কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাশেই ট্রলারে তোলার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জাল, খাবার, জ্বালানি তেল, বরফ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি। একেকটি ট্রলার একবার সাগরে যেতে প্রায় ৫-৬ লাখ টাকার বাজার করতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার ফিশারিঘাট, নুনিয়াছড়া, খুরুশকুল, মাঝেরঘাট, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া, মগনামা, বাঁশখালী, টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপ, শামলাপুর ও উখিয়ার জেলে পাড়া ও চরাঞ্চল থেকে একযোগে জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে যাবেন অনেক ছোট বড় নৌকা ও ট্রলার নিয়ে। এখন পূর্ব প্রস্তুতির মহোৎসব চলছে।
ট্রলার মাঝি জমির উদ্দিন জানিয়েছেন, গেল মৌসুমে সাগরে মাছ মেলেনি তেমন। অনেক ট্রলার মালিককে গুনতে হয়েছে মোটা অঙ্কের লোকসান। তাই এবার ভাগ্য ফেরানোর স্বপ্ন নিয়ে সাগরে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, জেলায় যন্ত্রচালিত ট্রলারের সংখ্যা ৫ হাজার ৫৪৯টি এবং অযান্ত্রিক নৌকার সংখ্যা ১ হাজার ২৩৫টি।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় ট্রলার ও নৌকায় নিবন্ধিত ৬৬ হাজার ১৯৩ জন এবং অনিবন্ধিত প্রায় ৫০ হাজার জেলে মাছ আহরণের কাজ করেন।
ট্রলার মালিক শাহজান, আবদুল কাদের, মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, সাগরে মাছ ধরার উৎসবের আমেজে হঠাৎ করেই হুমকি হয়ে দাঁড়ায় জলদস্যুর দল। মাঝিমাল্লাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি যেমনটি রয়েছে তার চেয়ে বেশি ঝুঁকি অনুভব করে জলদস্যুদের তাণ্ডব নিয়ে। যে বোটেই জলদস্যুরা হানা দিয়েছে সেই বোটের ইঞ্জিন, জাল, মাছ, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নেয়। ডাকাতির শিকার হওয়া এফভি আল্লাহর দান ট্রলারের মালিক সলিম উল্লাহ বলেন, আমার ট্রলারের সব জিনিসপত্র লুটপাট করেছিল ডাকাতরা। শুধু লুটপাট করেই ক্লান্ত হয় না তারা, বাধা দিলে মাঝিমাল্লাদের হত্যা করে সাগরে ভাসিয়ে দেয়।”