Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:14 am

নিয়োগ-বাণিজ্য: বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

নিজস্ব প্রতিবেদক: পৌনে চারশ’ পদে জনবল নিয়োগের অভিযোগে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্যসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমতি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত কর্মকর্তার দেওয়া অভিযোগপত্র পর্যালোচনা শেষে দুদকের নিয়মিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে গতকাল বুধবার সংস্থাটির দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

অভিযুক্তরা হলেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মু. আবদুল জলিল মিয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. শাহজাহান আলী মণ্ডল, অর্থ ও হিসাব বিভাগের সহকারী পরিচালক খন্দকার আশরাফুল আলম। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৩ সালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মু. আবদুল জলিল মিয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. শাহজাহান আলী মণ্ডল, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের উপপরিচালক এটিজিএম গোলাম ফিরোজ, অর্থ ও হিসাব বিভাগের সহকারী পরিচালক খন্দকার আশরাফুল আলম, সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মোর্শেদ উল আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই ৩৮৯টি পদে লোক নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশনের রংপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবদুল জলিল মিয়া ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শাহজাহান আলী মণ্ডলের বিরুদ্ধে রংপুর সদর থানায় দুদকের সমন্বিত রংপুর জেলা কার্যালয়ের তৎকালীন উপপরিচালক মো. আবদুল করিম বাদী হয়ে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে ওই কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আকবর আলী মামলাটির তদন্ত করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বেরোবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপক মু. আবদুল জলিল মিয়া ২০০৯ সালের ৭ মে থেকে ২০১৩ সালের ৫ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়কালে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগসাজশে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অনুমোদিত ২৮৫ জনবলের বিপরীতে ৬৭৪ জনকে নিয়োগ দেন। অর্থাৎ অনুমোদন ছাড়াই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে প্রায় পৌনে ৪০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়ে টানাপড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্যের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, বেরোবির সাবেক উপাচার্য ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিপিএফের টাকা সরিয়ে নেওয়াসহ ‘নর্থ বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’কে (এনআইডিএস) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তকরণ ও ডিন নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে তদন্তের পর অনুমোদনের জন্য দুদকে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আকবর আলী। অভিযোগপত্র পর্যালোচনা শেষে তা আদালতে দাখিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।