Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:15 am

নীতিমালা না করে হয়রানি বন্ধের দাবি বাজুসের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানির জন্য ব্যবসাবান্ধন নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। আর এ নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধের দাবি করেছে সংগঠনটি। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি জানায় বাজুস।

বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকারসহ সমিতির অন্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে নীতিমালা হলেও স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব হবে না এমন মন্তব্য করে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভারতে সোনার দাম ও আমদানি খরচ অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের মাধ্যমে সোনা ভারতে যাচ্ছে। নীতিমালা করা হলে দেশের স্বর্ণশিল্প লাভবান হবে। কিন্তু স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, বর্তমানে সোনা আমদানিতে প্রতি ভরিতে তিন হাজার চারশ টাকা শুল্ক দিতে হয়। এটি কমিয়ে ৫০০ টাকায় ও শূন্য শুল্কে নামিয়ে আনতে হবে। জটিল ও প্রায় অসম্ভব এলসি খোলার প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ব্যবসায়ীদের কাছে সোনা সরবরাহের জন্য ‘গোল্ড এক্সচেঞ্জ’ বা ‘গোল্ড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। সর্বোপরি আগামী অর্থবছরে যুগোপযোগী ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা করতে হবে। নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

বাজুসের দাবি, আগামী অর্থবছরের বাজেটে স্বর্ণ আমদানির সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। এছাড়া একটি যুগোপযোগী ব্যবসাবান্ধব স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা যাবে না। আগামী অর্থবছরের বাজেটে তাদের এ দাবি সম্পর্কে সরকার সুস্পষ্ট ঘোষণা যদি না দেয়, তাহলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে যে চরম ঘৃণ্য কাজ করেছে, তার বিচার দাবি করছি। আপন জুয়েলার্স বাজুসের সদস্য। ওই জুয়েলার্সের অবৈধ স্বর্ণ ও তার ছেলের অপকর্মের দায় সমিতি বহন করবে না। তারা দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা গঠনতন্ত্র অনুসারে ব্যবস্থা নেব।

এলসির মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানি করা হয় না কেন? তাহলে এত স্বর্ণ আসে কোথা থেকেÑসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাজুস সদস্যরা জানান, এলসির মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানি করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সেজন্য তাঁতিবাজারের পোদ্দারদের কাছ থেকে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে আসা স্বর্ণ কিনে ব্যবসা করা হয়। আপন জুয়েলার্সের এ ঘটনার আগ পর্যন্ত এটাই দেশে বৈধ উপায় ছিল। যা এখন ‘অবৈধ’ বলে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করছে সরকার।

এ সময় বাজুস সদস্যরা জানান, সারা দেশে ১৭ হাজার জুয়েলার্সের নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মালিক-শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত।