Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:52 pm

নীরব স্বাস্থ্যসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত

রংপুর সদর হাসপাতালের ৬০ লাখ স্যালাইন বিতরণ রংপুর সদর হাসপাতালে উত্তরাঞ্চলের একমাত্র সরকারি খাবার স্যালাইন উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বছরে ৬০ লাখের বেশি খাবার স্যালাইন উৎপাদন ও বিনামূল্যে সরবারাহ করে নীরব স্বাস্থ্যসেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে।
রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর জন্য জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় এসব খাবার স্যালাইন তৈরি ও সরবরাহ করা হয়। এখানে উৎপাদিত খাবার স্যালাইন উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় নিয়মিত পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ২৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিরলস শ্রমের ফলে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার প্যাকেট খাবার স্যালাইন উৎপাদন হচ্ছে।
এসব জেলার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর বিনামূল্যে চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার রেজাউল ইসলাম বলেন, স্যালাইন উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই। এখান থেকে প্রতি বছর ৬০ লাখের বেশি স্যালাইন উৎপাদন হয়। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে যেখানে স্বাস্থ্যসেবা চালু আছে, সেখানে এসব খাবার স্যালাইন সরবরাহ করা হয়।
সাধারণত জুনে খাবার স্যালাইনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তবে সংকট যাতে না হয়, সেজন্য আগে থেকেই স্যালাইনের রিজার্ভ বৃদ্ধি করা হয়। সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, চাহিদার তুলনায় এখানে বেশি স্যালাইন উৎপাদন হচ্ছে। স্যালাইনগুলো রাখার মতো তেমন বড় ধরনের কোনো সংরক্ষণাগার বা স্টোর নেই। তাই জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় এখানে একটি অত্যাধুনিক সংরক্ষণাগার নির্মাণ জরুরি প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে রংপুর পুরাতন সদর হাসপাতালের পরিত্যক্ত ভবনে এই খাবার স্যালাইন উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এখানে প্রতিবছর মাত্র চার থেকে পাঁচ লাখ প্যাকেট খাবার স্যালাইন উৎপাদিত হতো।
উৎপাদিত খাবার স্যালাইন রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রাজশাহী বিভাগের তিনটি সরকারি হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের ১৬টি রিজার্ভ সেন্টার, দুটি সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন পৌরসভা, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার ও হাসপাতাল এবং কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে দেওয়া হয়।
রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. জাকিরুল ইসলাম জানান, এ প্রতিষ্ঠান চাহিদা অনুযায়ী বিনামূল্যে স্যালাইন সরবরাহ করছে। উৎপাদিত খাবার স্যালাইন সংরক্ষণের জন্য একটি আধুনিক সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা প্রয়োজন। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মধ্যে শুধু রংপুর, যশোর, কুমিল্লা ও বরিশালে এ স্যালাইন উৎপাদন হয়।

নুর আলম