নীলফামারীতে টানা বৃষ্টিতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

প্রতিনিধি, নীলফামারী: দেশের উত্তরের জেলা নীলফামারীতে প্রচণ্ড দাবদাহের পর গত চার দিনের টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমেছে অনেকটাই। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৯ দশমিক শূন্য মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলার ডিমলা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিষয়টি নিশ্চিত করেন
পাউবোর পানি পরিমাপক মো. নুরল ইসলাম। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত থেকেই কখনও ভারী, কখনও মাঝারি, কখনও ঝিরঝির বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার চার দিন ধরে আশ্বিনের বৃষ্টিতে আয়-রোজগার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এতে দিনমজুর, কুলি, জুতার কারিগর, ভ্যানচালক, রিকশাচালকÑএ ধরনের শ্রমজীবী মানুষ টানা বৃষ্টির কারণে কাজে যেতে পারছেন না। অনেকেই বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে ছুটছেন শহরের দিকে।
নীলফামারী সদরের খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের হালির বাজার গ্রামের রিকশাচালক মহব্বত আলী (৪৮) জানান, সাত সদস্যের পরিবারে ভ্যানখানা একমাত্র রোজগারের পথ। ছেলেমেয়েদের খাবার জোগাড় দিতে প্রতিদিন শহরে যেতে হয়। কিন্ত গত চার দিনে বৃষ্টির কারণে হাত গুটিয়ে বসে আছি। আয়-রোজগার না থাকায় অভাবে আছি। তিনি বলেন, সকাল থেকে এযাবৎ ৫০ টাকার ভাড়া পেয়েছি। তা দিয়ে সংসারের কিছুই হবে না, বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। এদিকে টুপামারী ইউনিয়নের পুলিশলাইনস এলাকার রিকশাচালক রফিকুল ইসলাম একই কথা বলেন।

সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের নৃসিংহ ব্রাহ্মণ পাড়ার বিকাশ চ্যাটার্জি বলেন, এই আবহাওয়া দীর্ঘমেয়াদি হলে শাকসবজির (লালশাক, ধুনিয়া পাতা, মুলাশাক, লাউশাক) ব্যাপক ক্ষতি হবে। বাজারমূল্য
বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া ড্যাশা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে গত চার দিনে বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা কমেছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকালে এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নীলফামারী হিমালয়ের পাদদেশে থাকায় এ অঞ্চলে আগাম শীতের আগমন ঘটে। এর আগে প্রচণ্ড দাবদাহে সকালে ও রাতের শেষ ভাগে ঘন কুয়াশা দেখা দিয়েছিল।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (মিটার রিডার) নুরল ইসলাম জানান, তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৯ দশমিক শূন্য মিলিমিটার এবং বাতাসের গতিবেগ ৬ দশমিক শূন্য কিলোমিটার ও আর্দ্রতা ৯৩ শতাংশ বিরাজ করছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, কয়েক দিন ধরেই প্রখর তাপপ্রবাহ যাচ্ছিল। গত সোমবার রাত থেকে এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার) জেলায় ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত (প্রায় ছয় ইঞ্চি পানি) রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল বৃহম্পতিবার রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৪ মিলিমিটার। টানা বৃষ্টিপাতে তাপমাত্রা যেমন কমেছে, তেমনি এই বৃষ্টিপাতের ফলে শীতের আগাম আমেজ দেখা দিতে পারে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০