নীলফামারীতে ৭ বছরেও হয়নি সেতু সংস্কার

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী: নীলফামারীর জলঢাকায় ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নে গত ৭ বছরেও বন্যায় হেলেপড়া সেতুটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে পথচারীসহ স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী রাস্তা চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা দ্রুত সেতুটি সংস্কারের দাবি জানান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের ১নং ডাউয়াবাড়ি চরভরট গ্রামের বাসিন্দারা ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, হাটবাজার ও সদর উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো ওই সড়কের সেতুটি। চলাচল অনুপযোগী সেতুটি রয়েছে এ সড়কে।

২০১৭ সালের ১০ আগস্ট বন্যার পানির শ্রোতে সেতুটি ডান দিকে হেলে পড়ে। তারপরেও প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ে বারবার বলা সত্তেও এখন পর্যন্ত সেতুটি সংস্কার হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা মজিবর রহমান ও জিয়া জানান, আমাদের গ্রামটির সঙ্গে  উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক ও সেতুটি। এ সড়কের ওপর নির্মিত সেতুটি ত্রাণের টাকায় নির্মিত হয় ২০১৭ সালে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ত্রাণের ১২ লাখ টাকায় এ সেতু নির্মিত হয়। কিন্তু সেতুটির নি¤œমানের কাজ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে মাটি সরে গিয়ে ডান পাশে হেলে পড়েছে।

সে সময় বন্যার পানিতে সেতুটি হেলে পড়লে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে এবং সড়ক ও সেতু চলাচলের উপযোগী করতে এলাকাবাসীর সাহায্য-সহযোগিতায় বালি ফেলাসহ বাঁশ ও কাঠের সেতু নির্মাণ করে সংযোগ স্থাপন করা হয়। এভাবেই চলছে কয়েক বছর ধরে। এ জনদুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।

জিয়া জানান, সেই বালিও গতবারের বন্যায় সরে গিয়ে সেতু হেলে পড়লে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বর্তমানে বাঁশ ও কাঠের সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ। তারা বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে বিকল্প পথে দুই কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করেন। এতে আর্থিকভাবে অতিরিক্ত পয়শা গুনতে হয়। এ এলাকায় প্রায় থেকে সাত পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। তাই সেতুটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান।

জানতে চাইলে ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মুকুল বলেন, সেতুটি হেলে পড়ার দিনেই তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল হক প্রধান ও প্রকৌশলী হারুন অর রশীদকে জানানো হয়েছিল। সেই সময় তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোসহ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ত্রাণের ১২ লাখ টাকায় এ সেতুটি নির্মিত হয়। সেই সময় বন্যার পানিতে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছিল। কিন্ত আজও কোনো সুরহা হয়নি।

চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ময়নুল হক জানান, উপজেলা প্রকল্পের আওতায় ৪০ থেকে ৫০ ফুটের ওপরে সেতু নির্মাণ করা নীতিমালায় নেই। তাই হেলেপড়া ব্রিজটি সংযোগ সড়ক বন্যায় ভেঙে গিয়ে ১০০ ফিটের ওপরে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) ছাড়া কোনোভাবে সংস্কার করা সম্ভব নয়। আমাদের সামর্থ্যরে মধ্যে নেই। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে এলজিইডিকে জানানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুত এর একটা সমাধান হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০