নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার রায় ঘোষণা হবে ২৪ অক্টোবর। জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ ওইদিন আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
গতকাল সোমবার দু’পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারক রায়ের এ দিন নির্ধারণ করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহমেদ জানান।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত গত ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনীর পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। তারা হলেনÑসোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আবদুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আবদুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহসভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
এছাড়া অব্যাহতির জন্য সুপারিশ করা পাঁচজন হলেন নূর হোসেন, আলা উদ্দিন, কেফায়েত উল্যাহ জনি, সাইদুল ও আরিফুল ইসলাম। আইনজীবী হাফেজ আহমেদ বলেন, ৪৭ কার্যদিবসে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষে গত ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক শুরু হয়। সোমবার ছিল রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি খণ্ডনের দিন। যুক্তি খণ্ডন শেষে আদালত রায়ের দিন ঠিক করেছে। এদিন ১৬ আসামির মধ্যে ১৫ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। কামরুন নাহার মনি নামে এক আসামি বন্দি থাকা অবস্থায় সন্তান প্রসব করায় তাকে আনা হয়নি।
সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে নুসরাতকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে।’ তবে একাধিক আসামির আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু ‘নুসরাত আত্মহত্যা করেছেন’ বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘নুসরাত আত্মহত্যা করেছেন, কিন্তু পিবিআই একে হত্যা মামলায় রূপ দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ হত্যা বলে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আসামিপক্ষ প্রমাণ করেছে নুসরাত আত্মত্যা করেছেন।’
এ মামলায় মোট ৯২ জনের মধ্যে ৮৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদিপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু।