নিজস্ব প্রতিবেদক: বিডিআর বিদ্রোহের সময়কার হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এখন অপেক্ষা রায় কার্যকরের। রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন তিনি। গতকাল সকালে রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে বিডিআর বিদ্রোহে শহিদ সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। এটার রায় যথার্থভাবে কার্যকর করা হবে। আপনারা বিচারের জন্য যেভাবে ধৈর্যধারণ করে আসছেন, এভাবে ধৈর্যধারণ করবেন। আপনারা এ ঘটনার বিচার দেখতে পারবেন।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পেতেও সময় লেগেছে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা এটাও দেখেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারে অনেক সময় লেগেছে। তারপরও আজ আমরা স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। আমাদের কাছ থেকে কালো দাগ মুছে গেছে, আমাদের কপালে আর কালো দাগ নেই। আমরা অবশেষে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে পেরেছি।’
বিডিআর বিদ্রোহের বিচারে সময় লাগার কারণগুলো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে নৃশংস ও হƒদয়বিদারক ঘটনা ঘটবে, আমরা কল্পনাও করিনি। কতিপয় বিপথগামী বিডিআর সদস্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যথার্থ বিচারকার্যের মাধ্যমে একটি বিচার শেষ হয়েছে, আর একটি চলমান রয়েছে। বিচারকার্যে দীর্ঘসূত্রতার কারণে সময় লেগেছে। আমাদের সবকিছু উপাদান সংগ্রহ করতে একটু সময় লেগেছে। এ ছাড়া সাক্ষী জোগাড় করতেও বেশ সময় লেগেছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চাচ্ছিলাম এই ঘটনার সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার যেন হয়। আর বিচারকরা তাই করেছেন। আর যেই মামলার বিষয়টি চলমান রয়েছে, সেটা খুব শিগগিরই শেষ হবে। বিচার শেষ হওয়ার পরে আপিল করার একটি সুযোগ থাকে। সেটাও তারা করছেন। আমরা মনে করি এই প্রক্রিয়া শেষ হলে তারা ন্যায়বিচার পাবেন।’
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। যথাযথ মর্যাদায় শুক্রবার পিলখানা হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ১৩তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শহিদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম এবং শহিদ পরিবারের সদস্যরা।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ওই সময় কর্মরত সামরিক সদস্যরা স্যালুট প্রদান করেন। পরে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সব স্তরের সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়।