নেতা-কর্মীদের মুক্ত করা বিএনপির মূল লক্ষ্য

শেয়ার বিজ ডেস্ক : কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের জামিনে মুক্ত করাই এ মুহূর্তে বিএনপির প্রধান লক্ষ্য। এরপর দলটি আন্দোলন-কর্মসূচিতে মনোযোগী হতে চাইছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যসহ দলের প্রায় ২৩ হাজার নেতা-কর্মী এখনো কারাগারে আছেন। নতুন কর্মসূচির আগে কারাবন্দীদের মুক্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন দলের নীতিনির্ধারকেরা।

৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কোনো কর্মসূচি নেই বিএনপির। ভোটের পর সারা দেশে দুই দিনের গণসংযোগ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। সেটি ছিল ‘ভোট বর্জনের আহ্বানে সাড়া দেওয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ’ জানিয়ে প্রচারপত্র বিতরণের কর্মসূচি। এরপর আর কর্মসূচি দেওয়া হয়নি।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, ‘একপক্ষীয় ও সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় আসা’ এ সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে মাঠের কর্মসূচির জন্য আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তাঁরা দেখবেন, সরকার নতুন করে বিএনপির সঙ্গে কী আচরণ করে।

যদিও ভোটের পর নতুন প্রেক্ষাপটে আন্দোলন-কর্মসূচির ধরন ও কৌশল ঠিক করতে ইতিমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা সাংগঠনিক পর্যায়ে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক শুরু করেছেন। সমমনা কয়েকটি জোটের সঙ্গেও পৃথক মতবিনিময় হয়েছে। এসব বৈঠকে মূলত আন্দোলনকারী জোট নেতাদের ধন্যবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি নতুন কর্মসূচির বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, নতুন কর্মসূচির চেয়ে এই মুহূর্তে কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্ত করতে আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে বেশি মনোযোগী বিএনপি। এ বিষয়ে গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। পরদিন মঙ্গলবার দলীয় আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতাদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেন। সেখানে সারা দেশে কারা নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে এবং তাঁদের আইনি সহায়তা দিতে আইনজীবীদের তাগিদ দেওয়া হয়। নেতা-কর্মীদের জামিনের আইনি প্রক্রিয়ায় সরকার বা আদালত কী ধরনের ভূমিকা রাখেন, সেটি দেখতে চাইছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মসূচির দিকে নজর দিতে চান নেতারা।

তবে বিএনপির রাজশাহী ও বগুড়ার দুজন নেতা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মামলা ও জেল–জুলুমের শিকার তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে তেমন আইনি সহায়তা পাচ্ছেন না। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর ও আইনজীবীদের তথ্যমতে, দলের কারাবন্দী প্রায় ২৩ হাজার নেতা-কর্মীর মধ্যে ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ের অনেকে জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এ পর্যন্ত ১১টি মামলার মধ্যে ১০টিতে, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ১০ মামলার ৬টিতে জামিন পেয়েছেন। অন্য নেতাদেরও জামিনের আবেদন শুনানির প্রক্রিয়ায় আছে। দলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই মুহূর্তে বিএনপির মূল দৃষ্টি আদালতের দিকে। কারণ, পুরোনো মামলায় হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিচার শুরু হয়েছে। এর মধ্যে কেবল ঢাকার বিভিন্ন আদালতেই গত পাঁচ মাসে (আগস্ট থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত) ১১৩টি মামলায় ১ হাজার ৭৫৩ জন নেতা-কর্মীর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের রায় হয়েছে। এ বিষয়ে নীতিনির্ধারকেরা উদ্বিগ্ন।

 

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০