নেতৃত্বশূন্য হলো চট্টগ্রাম চেম্বার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৪ জন পরিচালক। ফলে চেম্বারের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনায় তৈরি হয়েছে শূন্যতা। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরীর কাছে চিঠি দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের এ অনুরোধ জানান সদ্যবিদায়ী সভাপতি ওমর হাজ্জাজ।
ব্যবসায়ীদের অভিমত, এখন প্রশাসক নিয়োগ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পাবে চট্টগ্রাম চেম্বার। সেজন্য মেম্বারশিপ সহজীকরণ করতে হবে। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা সদস্য হবেন, তারা নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারে সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ। ওই নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ-সমর্থিত মাহবুবুল আলম-নুরুন নেওয়াজ সেলিম পরিষদ ২৪ পদের মধ্যে ২০টিতে জয়লাভ করে। প্রতিদ্বন্দ্ব^ী মোরশেদ-সালাম ঐক্য পরিষদ পায় চারটি। পরের চারবার তার প্রতিপক্ষ হিসেবে কোনো প্যানেল বা প্রার্থী ছিল না। তাই ভোটও হয়নি। ২০০৮-১০ মেয়াদে এম এ লতিফ প্রথম চেম্বারের সভাপতি হওয়ার পর থেকে তার প্যানেলই এ সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। চেম্বারের নেতৃত্বে কারা আসবেন, তা মূলত এম এ লতিফই ঠিক করে দেন, কারণ চেম্বারের ভোটারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতো এ চেম্বারকে ঘিরে ‘চট্টগ্রামের সব ব্যবসায়ী সমাজ’ ও ‘বঞ্চিত ব্যবসায়ী সমাজ’র ব্যানারে বিভিন্ন সংগঠন চেম্বার পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগ ও পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।

চিঠিতে পদত্যাগী চেম্বার সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ী তথা সদস্যদের দাবির প্রতি সম্মান রেখে এ চেম্বারের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ করে আগামীতে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতার লক্ষ্যে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সব পরিচালক পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
তিনি চিঠিতে আরও বলেন, জরুরি কার্যাদির মধ্যে চেম্বারের সদস্যপদ গ্রহণ ও নবায়ন কার্যক্রম একটি দৈনন্দিন চলমান প্রক্রিয়া, যা আমদানি-রপ্তানিসহ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আবশ্যিক দলিল। চেম্বারের মালিকানাধীন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার একটি কেন্দ্রীয় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ২৪তলা ভবন, যেখানে একাধিক ব্যাংক, ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট, শিপিং ও করপোরেট হাউসসহ ২৭টি গুরুত্বপূর্ণ অফিস তাদের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চলমান রয়েছে ভবনের নির্মাণ ও নিয়মিত মেইনটেন্যান্স কাজ। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জেনারেটর, কেন্দ্রীয় শীততাপ নিয়ন্ত্রণ প্ল্যান্ট, চেম্বার কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা কর্মী, আনসার সদস্য ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিতে হয় নিয়মিত বিল বা পেমেন্ট।

পদত্যাগের ফলে সভাপতিমণ্ডলী ও বোর্ডের অবর্তমানে চেম্বারের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনায় শূন্যতা তৈরি হবে। এ অবস্থায় যেহেতু সব পরিচালক পদত্যাগ করেছেন সেহেতু চেম্বারের ২০২৩-২৫ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগ অনুমোদনপূর্বক সুষ্ঠু, সুন্দর, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন ও চেম্বারের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় যাতে অচলাবস্থা সৃষ্টি না হয় তার জন্য প্রশাসক নিয়োগের অনুরোধ জানানো হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০