শেয়ার বিজ ডেস্ক: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জেলার সঙ্গে উপজেলা দুটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে রেললাইনের কিছু অংশ তলিয়ে যাওয়ায় এবং একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নেত্রকোণা থেকে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ছয় উপজেলায় সাড়ে ১৬ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন।
নেত্রকোণা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার নাজমুল হক খান গতকাল শনিবার দুপুরে বলেন, ‘অতিরিক্ত বৃষ্টি ও ঢলের পানি বেড়ে যাওয়ায় নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ রেললাইনের কিছু অংশ ডুবে গেছে। এ কারণে শনিবার সকালের আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বারহাট্টা উপজেলার অতীতপুর স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ উপজেলার বিরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশের রেললাইন এখন পানির নিচে। স্টেশন মাস্টার নাজমুল হক আরও বলেন, ২৬২ নম্বর লোকাল ট্রেন মোহনগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছাতে না পেরে বারহাট্টা থেকে ঘুরে ঢাকার দিকে যাচ্ছে।
একই রেলপথের বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের ইসলামপুরে একটি রেলসেতু বন্যার পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারহাট্টা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রাব্বানি। তিনি বলেন, সকাল ৮টায় ইসলামপুরের কাছে ৩৪ নম্বর রেলসেতুটির কিছু অংশ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে আন্তঃনগর ‘হাওর এক্সপ্রেস’ মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি।
জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি হু-হু করে বেড়ে চলেছে। বন্যার পানি বাড়তে থাকায় স্থানীয় প্রশাসন পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন। তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করছে প্রশাসন।
এদিকে জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলায় বন্যার পানি ঢুকে প্লাবিত হয় বলে জানান ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি শুক্রবার বলেন, বারহাট্টার একাংশ প্লাবিত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে কতগুলো ইউনিয়নে কতজন মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন, তার হিসাব এখনও করা যায়নি। তবে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
অঞ্জনা আরও বলেন, টানা বৃষ্টির ফলে জেলার সব নদ-নদীর পানি বেড়ে চলেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আর বৃষ্টি কমে গেলে বিশেষ করে দুর্গাপুর উপজেলার পানি দ্রুত নেমে যাবে।