নেদারল্যান্ডসকে রেকর্ড হারের লজ্জা দিল অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক: বিশ্বকাপে দুরন্ত ছন্দে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে থামিয়ে দিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। প্রত্যাশা ছিল, না হারালেও অন্তত অসিদের বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবে ডাচরা। তবে বিশ্বকাপের ২৪তম ম্যাচে হলো না কিছুই। গতকাল বুধবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে পাত্তাই পায়নি নেদারল্যান্ডস। বরং বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের লজ্জাই পেতে হয়েছে তাদের। অসিদের কাছে নেদারল্যান্ডস হেরেছে ৩০৯ রানে। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এর আগে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটি ছিল ২৭৫ রানের। সেই রেকর্ডটিও করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ২০১৫ বিশ্বকাপে পার্থে আফগানিস্তানকে এত বড় ব্যবধানে হারিয়েছিল অসিরা।

তার আগে ২০০৭ সালের পর বিশ্বকাপে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে ডেভিড ওয়ার্নার টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন। তার মারকুটে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে স্টিভ স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেনের হাফ সেঞ্চুরি বড় ইনিংসের ভিত গড়ে দেয়। তবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকে। এ দিন বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরি করলেন ডানহাতি ব্যাটার। তাতে ৮ উইকেটে ৩৯৯ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া।

জশ ইংলিশ ৩৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হলে ক্রিজে নামেন ম্যাক্সওয়েল। তার আসার পরই ওয়ার্নার ফেরেন সাজঘরে। তখনও তিনি কোনো বল খেলেননি।

৪১তম ওভারে প্রথম বল মোকাবিলা করেন ম্যাক্সওয়েল। রান নেননি। পরের দুই বলে মেরেছেন চার। ৪৩তম ওভারে ক্যামেরন গ্রিনকেও রানআউট হতে দেখেছেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি তাণ্ডব শুরু করেন ৪৬তম ওভার থেকে। ২৭ বলে করেন হাফ সেঞ্চুরি, ৬ চার ও ২ ছয়ে। পরের পঞ্চাশ করেছেন আর মাত্র ১৩ বল খেলে। ৪৯তম ওভারে প্রথম দুই বল চার, তার পরের দুই বলে

ছয় মেরে শতকের দেখা পান ম্যাক্সওয়েল। ৪৮ ও ৪৯তম ওভারে ২১ ও ২৮ রান আসে। তার দানবীয় ব্যাটিংয়ে শেষ ৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৮৭ রান!

মাত্র ৪০ বল খেলেই ৮টি করে চার ও ছয়ে সেঞ্চুরি করেন ম্যাক্সওয়েল। একই আসরে দুইবার ভাঙে বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার এইডেন মারক্রাম চলতি বিশ্বকাপে ৪৯ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন, তারও চেয়ে ৯ বল কম খেলেছেন অসি ব্যাটার! শেষ ওভারের তৃতীয় বলে থামতে হয় ম্যাক্সওয়েলকে। ৪৪ বলে ৯ চার ও ৮ ছয়ে ১০৬ রান করেন তিনি। প্যাট কামিন্সের সঙ্গে ১০৩ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। বিশ্বকাপে সপ্তম উইকেটে এটাই অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ জুটি। যাতে ম্যাক্সওয়েল একাই করেছেন ৯১ রান, কামিন্স ৮।

লোগান ফন বিক পরের বলে মিচেল স্টার্ককেও ফেরান। নেদারল্যান্ডসের হয়ে তিনিই সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন।

এর আগে ওয়ার্নার বিশ্বকাপে নিজের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি করেন ৩৯তম ওভারের তৃতীয় বলে চার মেরে। বিশ্বমঞ্চে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির তালিকায় যৌথভাবে তিনি শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে। সাত সেঞ্চুরিতে সবার উপরে রোহিত শর্মা। ২২তম ওয়ানডে শতক হাঁকানোর পর ফন বিকের শিকার হন ওয়ার্নার, বাঁহাতি ব্যাটার ৯৩ বলে ১১ চার ও ৩ ছয়ে করেন ১০৪ রান। অবশ্য ৭৪ রানে জীবন পান ওয়ার্নার। রুলফ ফন ডার মারউই তার নিচু ক্যাচ ধরলেও টিভি আম্পায়ার কয়েকবার বিশ্লেষণ করে তা বাতিল করেন।

কিছুক্ষণ পরই ফন ডার মারউই আরেকটি নিচু ক্যাচে ৭১ রানে স্মিথকে থামান। তার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১৩২ রানের জুটি গড়েছিলেন ওয়ার্নার। লাবুশেন খেলেন ৬২ রানের আরেকটি ঝকঝকে ইনিংস।

নেদারল্যান্ডসের পেসার বাস ডি লিড সবচেয়ে বেশি খরুচে ছিলেন, ১১৫ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। তাতে করে অস্ট্রেলিয়ার মিক লুইস ও অ্যাডাম জাম্পা ওয়ানডেতে সবচেয়ে বাজে বোলিং ফিগারের লজ্জা থেকে রেহাই পেলেন্। দুজনেই ১১৩ রান দেন, প্রথম জন ২০০৬ সালে, দ্বিতীয় জন এ বছর। দুইবারই প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০