শেয়ার বিজ ডেস্ক: নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা জীবিতদের খোঁজে সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। খবর: রয়টার্স।
শুক্রবার রাতে ভ‚মিকম্প হলেও উদ্ধারকর্মীরা গতকাল শনিবার ভোরে ভ‚মিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোয় পৌঁছতে সক্ষম হন। এরপর তারা ধসে পড়া ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ হাত দিয়ে সরিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টা শুরু করেন। গত আট বছরের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক এই ভ‚মিকম্পে গতকাল সকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৩৭ জন ছিল। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।
জাজারকোট জেলার কর্মকর্তা হরিশ চন্দ্র শর্মা বলেন, আহতের সংখ্যা কয়েকশ জনে দাঁড়াতে পারে, আর মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে। ভ‚মিকম্পের তীব্রতা প্রবল না হলেও অঞ্চলটির অবকাঠামোগুলো দুর্বল হওয়ায় এবং তখন বেশিরভাগ মানুষ ঘুমিয়ে থাকায় ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক লাখ ৯০ হাজার জন-অধ্যুষিত জাজারকোট মূলত পাহাড়ি এলাকা। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এখানকার গ্রামগুলো বেশ দুর্গম। বহু এলাকায় জরুরি দলগুলোকে আগে ভ‚মিধসে বন্ধ হয়ে যাওয়া পথগুলো পরিষ্কার করতে হবে, তাই উদ্ধারকাজ হয়তো প্রত্যাশামতো শিগগির শুরু করা যাবে না।
এ ভ‚মিকম্পের কারণে অনেক দূরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ভবনগুলোও কেঁপে ওঠে।
নেপালের ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে কারনালি প্রদেশের জাজরকোট জেলার রামিদান্ডায় শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভ‚মিকম্পটি। তবে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস (জিএফজেড) বলছে, ভ‚মিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এদিকে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, ভ‚মিকম্পটি ছিল ৫ দশমিক ৬ মাত্রার।
নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, কারনালি প্রদেশের জাজারকোটে ৯৯ জন নিহত ও ৫৫ জন আহত হয়েছেন এবং পশ্চিম রুকুম জেলায় ৩৮ জন নিহত ও অন্তত ৮৫ জন আহত হয়েছেন।
ভ‚মিকম্পে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল (প্রচণ্ড) গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি শনিবার সকালে ক্ষয়ক্ষতি দেখতে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় উপকরণসহ জাজারকোটের দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যান। জাজারকোট হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি তাদের স্বজনদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
এর আগে ২০১৫ সালে নেপালে দুটি ভয়াবহ ভ‚মিকম্পে নিহত হয়েছিল ৯ হাজারের মতো মানুষ। তখন কয়েকটি শহর, শত বছরের পুরোনো অনেক মন্দির ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা পুরোপুরি মাটিতে মিশে গিয়েছিল। ধ্বংস হয়েছিল ১০ লাখের বেশি ঘরবাড়ি।