নিজস্ব প্রতিবেদক: নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। এ বিদ্যুৎ আমদানি করতে ব্যবহার করা হবে ভারতীয় সঞ্চালন লাইন। যেহেতু এই প্রক্রিয়ায় বেশিসংখ্যক পক্ষের অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই; তাই বিদ্যুৎ আমদানি করতে সরকার কোনো দরপত্র আহ্বান করা হবে না।
কাজটি করা হবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম)। দরপত্র ছাড়া নেপাল থেকে ডিপিএমে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য গতকাল বুধবার একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে। অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, ‘বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) মাধ্যমে ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।’
নেপাল থেকে এ বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হবে বলে বিউবোর সূত্রগুলো জানায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পাশাপাশি শুল্ক হার বা ইউনিট মূল্য নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়।
নেপাল থেকে এ বিদ্যুৎ আমদানির জন্য গত মে মাসে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি হয়। সে চুক্তি অনুযায়ী নেপালের এক প্রকল্প থেকে ২৪ মেগাওয়াট এবং আরেক প্রকল্প থেকে ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। বর্তমানে ভারত থেকে তিনটি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে যে ২ হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে, ইউনিটপ্রতি তার দাম পড়ছে ৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮ টাকা। নেপাল থেকে আনা বিদ্যুতের দামও এর কাছাকাছিই থাকবে বলে জানা গেছে।
বিদ্যুৎ আমদানিবিষয়ক চুক্তি অনুযায়ী, নেপালের ত্রিশুলি প্রকল্প থেকে ২৪ মেগাওয়াট, অন্য একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসার কথা। বাংলাদেশের ভেড়ামারায় জাতীয় সঞ্চালন লাইনে এ বিদ্যুৎ আসবে ভারতের বহরমপুর সঞ্চালন লাইন দিয়ে।
বিউবো সূত্র জানায়, ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হলে দুই দিক থেকেই লাভবান হবে বাংলাদেশ। যেমন শীতের যে সময়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়, তখন নেপালে থাকে শুষ্ক মৌসুম। দেশটির তখন বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা থাকে। ওই সময় নেপাল বরং বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল গত জুন মাসে ভারত সফর করেন। ওই সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় নেপালের। ওই চুক্তি অনুযায়ী, নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসবে ভারতের সঞ্চালন লাইন দিয়ে। এদিকে গত মে মাসে বিউবো এবং ভারতের বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেরও বিদ্যুতের দাম নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সঞ্চালন মাশুল ও সেবা মাশুল পরিশোধ করতে হবে ভারতকে।