নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে তা থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য শিগগিরই এ দেশগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করতে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, শিগগিরই, সম্ভবত আগামী মাসেই সমঝোতা স্মারক সই করতে নেপালে যেতে পারি। নেপালে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাংলাদেশ বিনিয়োগও করবে।
ভারতের ভেতর দিয়ে এই বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বাংলাদেশে আসবে এবং এ জন্য ভারতের সম্মতিও পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটানের মতো দেশগুলোয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করে ৮০ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং রফতানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েই এ থেকে উপকৃত হতে পারে।
এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসবে ভারতের ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে একটি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে। এ জন্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকগুলোয় ইতোমধ্যেই ভারতের সম্মতি পাওয়া গেছে; তবে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ও চুক্তি হবে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পর লেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে আমার কথা হয়েছে। ভারত নিজেও এতে বিনিয়োগ করতে পারেÑএমন সম্ভাবনাও আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ভুটান ও নেপালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভুটানে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে বাংলাদেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ভুটানও আগ্রহ প্রকাশ করে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) প্রস্তুত করে ভারত এবং বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। খুব শিগগির এ বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। সব মিলে আঞ্চলিক পর্যায়ে বিদ্যুৎ আমদানি-রফতানির বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই এগোচ্ছে।
পাওয়ার সেল মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন বলেন, ভারতের বিভিন্ন কোম্পানি ভুটান এবং নেপালে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। এরই মধ্যে ভারতের এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির প্রস্তাবও করছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশও এসব দেশের জলবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশ নেপাল, ভারত, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘদিন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিল। এ ক্ষেত্রে ট্যারিফ নির্ধারণ, অবকাঠামোসহ কিছু কিছু বাধাও ছিল। কিন্তু এসব বাধা কেটে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই চার দেশ এ নিয়ে দিল্লিতে একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ভুটানে মাত্র দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও সেখানে ২৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভুটানের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কম থাকায় গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ আনতে পারবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে শীতকালে বাংলাদেশে চাহিদা কম থাকায় সে সময় ভুটানে বিদ্যুৎ দিতে পারবে বাংলাদেশ। একইভাবে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যেও আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বিনিময় চুক্তি হতে পারে। এ ব্যাপারেও আলাপ-আলোচনা চলছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এছাড়া শিগগির আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারত থেকে পাওয়া যাবে।
Add Comment