প্রত্যেকটি পেশায় নৈতিকতা ও দায়বদ্ধতা থাকা উচিত। শুধু আইন-কানুন দিয়ে ব্যবসা শতভাগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়। প্রত্যেকটি ব্যবসা বা কাজে যদি নৈতিকতা থাকে তাহলে এত আইনের প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে নীতি-নৈতিকতার অভাব রয়েছে। কারণ কোম্পানিগুলো ভালো মুনাফা করলেও বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে তা লুকানো হয় এবং মুনাফা কম দেখানো হয়। নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে স্টক লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। এটা আসলে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা। তাই নৈতিকতা থাকাটা কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকের জন্য অত্যন্ত জরুরি। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক শাহাদাৎ হোসেন।
মাহমুদ হোসেন বলেন, দেশের পুঁজিবাজারের আইনে দুই ধরনের লভ্যাংশের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের পুঁজিবাজারে লভ্যাংশ দেওয়ার পদ্ধতি আরও বেশি রয়েছে। শুধু নগদ ও বোনাস লভ্যাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এ বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা স্টক লভ্যাংশকে নিরুৎসাহিত করছে আর নগদ লভ্যাংশকে উৎসায়িত করছে। কোনো কোম্পানি নগদ লভ্যাংশ দিলে সেই কোম্পানির পারফরম্যান্স সহজেই বোঝা যায়। কথা হচ্ছে, যদি কোনো কোম্পানিকে নগদ লভ্যাংশ দিতে উৎসাহিত করা হয় সে ক্ষেত্রে ওই কোম্পানির অবস্থা ভালো হতে হবে। আবার কোম্পানির পরিচালক বা উদ্যোক্তাদের হাতে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। কেন ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকবে। এর চেয়ে আরও বেশি বাড়ানো উচিত।
তিনি আরও বলেন, যখন একটি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, তখন অবশ্যই ডিএসইর দেখার দায়িত্ব রয়েছে কেন শেয়ারদর বাড়ছে। কোনো কোম্পানির শেয়ারদর ১০ শতাংশ বাড়লে সেটি নিয়ে ডিএসইর হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়। আবার দেখা যায়, কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিকহারে বাড়ছে কিন্তু সেটি নিয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করে না।
শাহাদাৎ হোসেন বলেন, প্রত্যেকটি ব্যবসায় এবং পেশায় নৈতিকতা ও দায়বদ্ধতা রয়েছে। শুধু আইন-কানুন দিয়ে শতভাগ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। প্রত্যেকটি ব্যবসা বা কাজে যদি নৈতিকতা থাকে সে ক্ষেত্রে এত আইনের প্রয়োজন পড়ে না। আসলে নৈতিকতার অভাব রয়েছে। কারণ কোম্পানিগুলো ভালো মুনাফা করলেও বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে তা লুকানো হয় এবং প্রফিট কম দেখানো হয়। নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে স্টক লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। এটা আসলে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা। তাই নৈতিকতা থাকাটা কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকের অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজার হচ্ছে একটি স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে বিনিয়োগ করলে লাভ বা লোকসান হবেই। আর এটি বিনিয়োগকারীকেই বহন করতে হয়। বিশ্বের সব পুঁজিবাজারে এটি সর্বজন স্বীকৃত। কিন্তু আমাদের পুঁজিবাজারে সেটা একটু ভিন্ন। কারণ এখানে লোকসান হলে বিনিয়োগকারীর আর লাভ হলে ডিএসই বাধা দেবে। গত ৯ বছর সেটি দেখা গেছে। কী কারণে এটি হচ্ছেÑএকমাত্র যারা বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছেন তারাই ভালো বলতে পারবেন। এটি ভালো বাজারের পরিপন্থি। এমনটা হওয়া উচিত নয়।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ