শেয়ার বিজ ডেস্ক: গ্রিসে ওষুধ কোম্পানি নোভার্টিসের বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে এবার বের হয়ে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওষুধশিল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে দেশটির দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ ১০ সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নোভার্টিসের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে বাড়তি স্ুিবধা দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। খবর বিবিসি।
নিজেদের ওষুধ বেশি পরিমাণে ও বেশি দামে বিক্রির জন্য চিকিৎসকসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে নোভার্টিসের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছিল। তবে এক বছর ধরে তদন্ত করার পর কর্মকর্তারা দেখেন, কোম্পানিটি তাদের উৎপাদিত ওষুধের বিক্রি বাড়ানোর জন্য শুধু চিকিৎসক নয়, রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদেরও ঘুষ দিয়েছিল। এতে জড়িত রয়েছেন দেশটির বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীও। তাই তদন্ত কর্মকর্তারা এবার গ্রিসের সংসদের কাছে অভিযুক্ত মন্ত্রীদের বিষয়ে নথি চেয়ে পাঠিয়েছেন। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা-সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন ও ওষুধের দাম নির্ধারণে কোনো পক্ষপাতিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনও সবার নাম প্রকাশ করেনি তদন্ত কমিটি। সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হবে। এরই মধ্যে নোভার্টিসের স্থানীয় ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তদন্ত কমিটি।
গত জানুয়ারিতে স্থানীয় কর্মকর্তারা নোভার্টিসের অফিসে তল্লাশি চালানোর খবর প্রকাশের পর থেকে কোম্পানিটির বিপদ বাড়তে থাকে। এছাড়া দেশটির শেয়ারবাজারের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চার হাজারের বেশি চিকিৎসককে ঘুষ দেওয়া-সংক্রান্ত দলিলাদি হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহীদের। এর মধ্যে অ্যাথেন্স হোটেলে একজন নির্বাহী কর্মকর্তা কয়েকবার আত্মহত্যার হুমকির খবর ছড়িয়ে পড়লে তা সবার নজর কাড়ে।
এরই মধ্যে গ্রিসের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা এলেনি রাইকও পদত্যাগের ঘোষণা দিলে নাটক আরও জমে ওঠে। সে সময় তিনি দাবি করেন, নোভার্টিসের দুর্নীতি তদন্ত করতে গিয়ে তাকে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। নিজের পদত্যাগপত্রে তিনি দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের স্বার্থের কারণে নিজেকে বলি করতে পারবেন না। সে সময় তিনি অভিযোগ করেন, এসব কর্মকর্তা ও ব্যক্তিরা তদন্তকে প্রভাবিত করতে তার নৈতিকতা ধ্বংসের ষড়যন্ত করছে।
তবে অভিযুক্তদের অন্যতম সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী দিমিত্রিস আভ্রামোপোলাস এই দুর্নীতির ঘটনায় নিজের নাম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেন, ওষুধসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও দাম নির্ধারণে কাজে তিনি জড়িতই ছিলেন না। আর সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ইভানগেলোস ভেনিজেলোস আত্মপক্ষ সমর্থনে বলেছেন, এটা তার বিরুদ্ধে সস্তা রাজনৈতিক অপপ্রচার।