আকাশ মো. জসিম, নোয়াখালী: নোয়াখালী জেলাজুড়ে লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছাড়াই ঝুঁকিপূূর্ণভাবে চলছে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা। জেলার সদর ছাড়াও প্রতিটি উপজেলার হাটবাজারগুলোয় অনিরাপদভাবে প্রশাসনের চোখের সামনে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এ জ্বালানি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই চালাচ্ছে এ অবৈধ গ্যাস ব্যবসা। ব্যাঙের ছাতার মতো জেলার সর্বত্র অবৈধ গ্যাস ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন সচতেন মহল।
এছাড়া রাস্তার পাশে অত্যন্ত খোলামেলাভাবে গ্যাস বিক্রির ফলে চরম ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হচ্ছে ক্রেতা, পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নিয়মবহির্ভূত গ্যাস ব্যবসার ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অসাধু ব্যবসায়ী চক্র সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে গ্যাস বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ ক্রেতাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাইসেন্স ছাড়া জেলাজুড়েই অনেক ব্যবসায়ীই অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা চালাচ্ছেন। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মুদি, মনোহারি, কসমেটিকস, পেট্রোল, মবিল, ওষুধসহ ইলেকট্রনিকস দোকানেও বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। বছরের পর বছর অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবসা চালালেও নির্বিকার প্রশাসন।
জেলার সদর উপজেলার ভাটিরটেক বাজারের কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, গ্যাস ব্যবসায়ীদের একটি চক্র সিন্ডিকেট করে সাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছে।
১৮৮৪ সালের বিস্ফোরক আইন অনুযায়ী, এলপিজিসি গ্যাস (রুলস) ২০০৪-এর ৬৯ ধারার (২) এর বিধি অনুযায়ী লাইসন্সে ছাড়া কোনোভাবে গ্যাস মজুত করা বা বিক্রি নিষিদ্ধ। এছাড়া একই বিধির (৭১) ধারা অনুসারে গ্যাস বিক্রির দোকানগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম থাকতে হবে। তবে সচতেন মহল মনে করেন, স্থানীয় প্রশাসনসহ বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাঠপর্যায়ে কোনো অভিযান না থাকায় খোলামেলাভাবে অবৈধভাবে গ্যাসের রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্রেতারা।
এ ব্যাপারে সোনাপুর বাজারের ব্যবসায়ী গ্যাস বিক্রেতা রবিউল হক বলেন, ‘আমার লাইসন্সে আছে। তবে, বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া গ্যাস বিক্রির কোনো নিয়ম নেই। অবৈধ গ্যাস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে আমি জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে কিছুই হয়নি।’
জানতে চাইলে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা চলমান অভিযানে এসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’