Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 3:17 pm

নোয়াখালী টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ

প্রতিনিধি, নোয়াখালী: টানা ভারী বর্ষণে ফের ডুবছে নোয়াখালী। জলাবদ্ধতায় এরই মধ্যে আটকা পড়েছেন অন্তত ১২ লাখ মানুষ। ডুবে গেছে সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলার বাসিন্দাদের।

গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, নিম্নাঞ্চলগুলো ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে। ডুবে আছে বসতঘর ও সড়ক। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।

তবে জীবিকার তাগিদে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বের হয়েছেন রিকশাচালক, শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষ। রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকায় তারাও পড়েছেন বিপাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও তেমন খোলেনি। অনেকেই ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, নোয়াখালীর আট উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের প্রায় ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ মানুষ এই মুহূর্তে পানিবন্দি হয়ে আছেন। ৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ২ হাজার ১৮৫ জন।

বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো. ফারুক হোসেন বলেন, আজ সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের প্রায় সব গ্রামের মানুষ পানিবন্দি। নিচু এলাকাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় আগের বন্যার পানিও এখনো নামেনি। নতুন করে বৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে।

সদর উপজেলার বাসিন্দা মো. সুজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্যার পানি কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে আবার বেড়েছে। গত মাসেও এমন অবস্থা হয়েছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন কেউ খবর নেবে না, সহযোগিতাও করবে না।

আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি আমরা জেনেছি। পানিবন্দি কোনো মানুষ যাতে খাদ্যাভাবে কষ্ট না পায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পানি নিষ্কাশনে একাধিক কার্যক্রম শুরু করেছি। আশা করি বৃষ্টিপাত না হলে দ্রুতই পানি কমে যাবে।