Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:25 am

নোয়াখালীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার সংকট, ব্যাহত করোনা চিকিৎসা

আকাশ মো. জসিম, নোয়াখালী: জেলার শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেনের সিলিন্ডার সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে।

সূত্র জানায়, এ জেলায় ইতোমধ্যে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তে যতজন মারা গেছেন প্রায়জনই শ্বাসকষ্টের যন্ত্রনায় ভুগছিলেন। আর এসব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ও অত্যাবশ্যকীয় অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকায় প্রত্যাশিত সেবা দেয়া সম্ভব হয়নি তাদের।

জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়লেও এ দুই হাসপাতালে বাড়েনি অক্সিজেনের সিলিন্ডার। এছাড়া জাতীয় পর্যায় থেকে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থাও নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ অবস্থায় শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত বা জটিল কোন রোগি ভর্তি হলে চিকিৎসাসেবা দিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

এদিকে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও ২০ শয্যার করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬০টি। এখানে ২০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৩ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি হওয়া এসব রোগীদের অক্সিজেনের দরকার হলে হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের সমন্বয়ক ডা.নিরুপম দাশ বলেন, জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগিদের শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল প্রস্তুত করে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে স্টেডিয়ামকে হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে।

কভিড হাসপাতালে হাই-ফ্লো ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন দরকার হলেও তা এখানে করা হয়নি। তিনি বলেন, সিলিন্ডারের অক্সিজেন দিয়ে রোগীকে ভালো রাখার চেষ্টা করছি। ১৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন হলেও মাত্র ৪২টি সিলিন্ডার দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে এ হাসপাতালে। তাও পরিমাণমত পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, রোগির অক্সিজেনের মাত্রা বা স্যাচুরেশন ৯৩ শতাংশের নিচে নেমে গেলে, প্রথমে অল্প মাত্রায় অক্সিজেন দিতে হয়। এতে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে, অক্সিজেনের মাত্রা দ্বিগুণ করে দিতে হয়। এখানে ৮০টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৫৪ জন রোগি। এ পর্যন্ত এ হাসপাতালে ১৪০ জন রোগি ভর্তি হয়েছেন এবং ৯১ জন সুস্থ হয়েছেন।

জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাদের জন্য অন্তত ৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন রয়েছে। অক্সিজেন সংকটের কারণে রোগীদের সেবা ব্যহত হচ্ছে।

জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাসপাতালে কখনও অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংকট হয়নি। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। আরও ৫০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য চাহিদাপত্র দিয়েছি। সেগুলো এলে সংকটের অবসান হবে।