Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:37 am

নোয়াখালীতে বেড়েছে পূজামণ্ডপ, চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি

প্রতিনিধি, নোয়াখালী : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আগামী পয়লা অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে প্রতিটি পূজামণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। ঘনিয়ে আসছে পূজার সময়, তাই শেষ সময়ে প্রতিদিনই পূজামণ্ডপগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমাশিল্পীরা।

গেল বছর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল নোয়াখালীতে। জেলার চৌমুহনী এলাকার অন্তত ১১টি পূজামণ্ডপ ও ৬টি মন্দিরে একযোগে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া বেগমগঞ্জের ছয়ানীতে একটি পূজাম-প, একটি কালীমন্দির ও দুর্গাপুরে একটি পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছিল।

২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর বিকালে চৌহমুনীর ওই ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে দুজনের প্রাণহানিসহ লুটপাট করা হয় মন্দিরগুলোর অর্থ, ভাঙচুর করা হয় ম-পগুলোর সব প্রতিমা। সেই ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষত এখনো শুকায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বাধিক তৎপরতার মধ্যে অতীতের সব শঙ্কাকে শক্তিতে রূপান্তর করে জেলায় বাড়ানো হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপ।

বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ নোয়াখালী জেলা শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে জেলায় ১৬৯টি মণ্ডপে প্রতিমা পূজা এবং ঘট পূজা হয় ৬টি মণ্ডপে। এর মধ্যে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভায় ১১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছিল। চৌমুহনীর ১১টি মণ্ডপেই ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়। এবার জেলায় নতুন করে আরও ৬টি পূজামণ্ডপ বাড়িয়ে ১৭৫টিতে প্রতিমা পূজা এবং ৫টিতে ঘটপূজা পালিত হবে। এর মধ্যে চৌমুহনী পৌরসভাসহ বেগমগঞ্জে ২৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ বেগমগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য সচিব জয় ভূঞা বলেন, গত বছর চৌমুহনীতে ৬টি মন্দির ও ১১টি পূজামণ্ডপ একযোগে যেভাবে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, তাতে যে ক্ষত তৈরি হয়েছিল, তা এখনো শুকায়নি। তারপরও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সেই শঙ্কাকে শক্তিতে রূপান্তর করে অনেকটা ক্ষুদ্র আকারে মায়ের পূজা অর্চনা করে আসছে। আমাদের ওপর যতই নির্যাতন হোক, মায়ের পূজা করতেই হবে। তিনি বলেন, এবার পূজামণ্ডপ ও মন্দিরগুলোতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলা হলেও গত বছরের ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমরা এখনো আতঙ্কিত। আশা করছি প্রশাসন এ ব্যাপারে প্রয়োজনী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম (পিপিএম) বলেন, সব ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দুর্গাপূজার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ম-পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া বড় ম-পগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী টহলে থাকবে। গত বছর শারদীয় দুর্গোৎসবে জেলার বেগমগঞ্জের চৌমুহনী ও ছয়ানী ইউনিয়নে ঘটে যাওয়া হামলার বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, সেটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। ওই ধরনের ঘটনা এড়াতে সরকারের নির্দেশনা মেনে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের আহ্বান জানান তিনি।