আব্দুল কবীর ফারহান, নোবিপ্রবি : নোয়াখালীর সোনাপুর জিরো পয়েন্টে অজয় চত্ত্বর চান নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। ট্রাক চাপায় নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী অজয় মজুমদারের মৃত্যুতে শোকাহত শিক্ষার্থীদের ডাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট ২০ দফা দাবী তুলে তারা।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট ছোট বড় ২০ টি দাবী উপস্থাপন করে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, সাধারণ সম্পাদক মাজনুর রহমান এবং ব্যবসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সেলিম উদ্দিন, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক বিপ্লব মল্লিক সহ বিভিন্ন হল প্রভোস্ট, প্রক্টোরিয়াল টিমের সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) নোয়াখালীর সোনাপুর জিরো পয়েন্টে ট্রাক চাপায় গুরুতর হতাহত হয়ে হসপিটাল নেয়ার পথে মৃত্যু বরণ করে নোবিপ্রবি ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শেসনের শিক্ষার্থী অজয় মজুমদার (২৩)।
এ ঘটনায় আজ বিচারের দাবী ও রাস্তা সংস্কার, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন ব্যবস্থার বাড়ানো এবং গতিসীমা নির্ধারণ সহ কয়েক দফা দাবীতে রাস্তায় নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোনাপুর জিরো পয়েন্ট, নোয়াখালী শহরের টাউন হল মোড় এবং সুপার মার্কেটের সামনে তিন ভাগে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা।
এসময় রাস্তায় জ্যাম কমাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবী সমূহ মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামানোর চেষ্টা চালায় এবং পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট শিক্ষার্থীদের দাবীসমূহ উপস্থাপনের জন্য ডাকলে আন্দোলন স্থগিত করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অজয় মজুমদারের শোকে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরবর্তীতে দাবী উপস্থাপন করতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের বোঝা কমাতে পরিবারের কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়া, সোনাপুর জিরেপয়েন্টে অজয় চত্ত্বর স্থাপন অথবা অজয় ফুট ওভারব্রিজ নির্মান, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে ক্লাসরুম বন্ধ করা এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম এনে চিকিৎসার মানোন্নয়ন করা, শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা বাড়ানো, পরিবহন সংখ্যা বাড়ানো, শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তার টেকসই সংস্কার, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তায় গতিসীমা নির্ধারণ, ক্যাম্পাস সম্মুখ রোডে বড় গাড়ী চলাচল নিষিদ্ধ এবং উক্ত সড়ক দূর্ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক শাস্তি প্রদান করা সহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য মোট ২০ টি দাবী উপস্থাপন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী দাবী সমূহ মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন নোবিপ্রবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর। জেলা প্রশাসন বা অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে জড়িত সমস্যা সমূহ সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে বলে জানান প্রক্টর। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারকে সুবিধানুযায়ী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।