রফিকুল ইসলাম, দিনাজপুর : আড়াইশত বছরের পুরানো ঐতিহ্য ও দিনাজপুরের রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী ঐতিহাসিক কান্তজীউ মন্দির হতে শ্রীশ্রী কান্তজীউ’র যুগল বিগ্রহ নৌপথে রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বেশ কয়েটি স্থানে পুজা অর্চনা শেষে আজ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাজবাড়ীতে পৌছাবে এই যুগল বিগ্রহ।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কান্তজীউ মন্দির হতে পূজা অর্চনা শেষে শ্রীশ্রী কান্তজিউ বিগ্রহ পূর্ণভবা নদীর কান্তনগর ঘাটে আনা হয়। দিনাজপুর-০১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপাল কান্তজীউ বিগ্রহ যাত্রা উদ্বোধন করেন। এসময় পূর্ণভবা নদীর দুই তীরে ভক্ত-পূণ্যার্থীর ভীড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।
দিনাজপুরের রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৫শ’ বছর আগে। সেই বংশের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে দিনাজপুর শহর থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর এলাকায় শ্রীশ্রী কান্তজিউ মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে এই মন্দিরের কাজ শেষ করেন তার পোষ্যপুত্র রামনাথ। সেই সময় থেকেই কান্তজিউ বিগ্রহ নয় মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে রাখা হয়। জন্মাষ্টমীর একদিন আগে কান্তজিউ বিগ্রহ ধর্মীয় উৎসব-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের রাজবাড়ীতে নিয়ে আসা হয়।
কান্তনগর মন্দির হতে দীর্ঘ প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীপথে কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুরঘাট পর্যন্ত শতাধিক ঘাটে কান্তজিউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভিড়ানো হয়। নৌকাযোগে দিনাজপুর আসার সময় হিন্দু ধর্মালম্বী হাজার হাজার ভক্ত নদীর দুই কুলে কান্তজিউ বিগ্রহকে দর্শন এবং বাড়ীর বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য সাকসবজি নিয়ে শ্রীশ্রী কান্তজিউ বিগ্রহকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে আসে। এসময় নদীর দুই কুলে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্যদের ভীড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।