Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:46 pm

নৌ-চলাচল বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় স্থানীয় সরকার বিভাগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ও মাঠপর্যায়ের সব সরকারি কর্মকর্তাকে সার্বিকভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গতকাল স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতিমূলক এক জরুরি সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

স্থানীয় সরকার বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভার্চুয়ালি এই জরুরি সভার আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলার জন্য আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি তদারকি ও সমন্বয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর ৯৫৪৫৪১৫। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সহযোগিতায় এ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে খোলা অন্য কন্ট্রোল রুমের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের অন্য প্রতিষ্ঠান এবং জেলা প্রশাসনসহ অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান যে কোনো দুর্যোগে মানুষকে সচেতন করা এবং নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আসাসহ মানসিকভাবে শক্তি জোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সব স্তরের জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে বসে করণীয় ঠিক করে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলে যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব।’

হঠাৎ জলোচ্ছ্বাসে তীব্র পানি সংকট সমাধান ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা প্রস্তুত

 রাখাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি ওয়াসা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এরই মধ্যে মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ওয়াটার পিউরিফাই ট্যাবলেট, স্যানিটেশন ব?্যবস্থাসহ অন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম প্রস্তুত রেখেছে বলেও জানান মন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং উপকূলীয় জেলার জেলা প্রশাসকরা সভায় যুক্ত ছিলেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর কারণে সারাদেশে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গতকাল বিকালে তা বন্ধ ঘোষণা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দুই নম্বর সতর্ক সংকেত রয়েছে। এই সংকেতে ৬৫ ফুটের বড় নৌযান চলাচল করতে পারে। কিন্তু বাড়তি সতর্কতা এবং কোনো ধরনের প্রাণহানি যাতে না ঘটে, সেজন্য এই ঘোষণা।’ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নদীপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।

কভিডকালে বিধিনিষেধের কারণে সাত সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল এক দিন আগে শুরু হয়েছিল।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ গতিবেগ বাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ভারতের উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে। এখন পর্যন্ত ঝড়ের যে গতিপথ, তাতে বাংলাদেশে তা সরাসরি আঘাত করবে না বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে এর প্রভাব বলয়ের মধ্যে উপকূলীয় এলাকা রয়েছে। আর পূর্ণিমার জোয়ারের সময় ঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়লে উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।