শেয়ার বিজ ডেস্ক : ন্যায়বিচারের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ববাসীর দাঁড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে এ কথা বলেন।
ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইসিআর) পর্ষদ সদস্য ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাগুলোর একজন দূত হিসেবে রানি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতার কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবেন যাতে দুর্দশায় থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি সহায়তার পরিমাণ দ্রæত বাড়ানো সম্ভব হয়।
গতকাল সোমবার উখিয়ার কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের দেখতে এসে রানি বলেন, ‘কেবল মানবিক কারণে নয়, ন্যায়বিচারের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ববাসীর দাঁড়ানো উচিত।’
গত আগস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর পৌনে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
রানি বলেন, ‘রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পরিচালিত এই জাতিগত নিধন বিশ্বের সবচেয়ে জঘন্যতম ও বর্বরতম ঘটনা। এই গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে স্বোচ্চার হতে হবে।’
গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিমানে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে আসেন রানি। এরপর কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে গিয়ে কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি এবং পর্যবেক্ষণ করেন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কার্যক্রম।
শিবির পরিদর্শন শেষে তিনি কুতুপালং আইওএমের অস্থায়ী হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন।
রানি বলেন, ‘এখানে ৯৫ শতাংশ রোহিঙ্গা মৌলিক চাহিদার সংকটে রয়েছে। মিয়ানমারে যে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চলছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন।’
জেনেভায় গতকাল সোমবার অনুষ্ঠেয় বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রানি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চলা হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের কথা রোহিঙ্গাদের কাছে শুনেছি। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যেটা হয়েছে, সেটা জাতিগত নিধন। জর্ডান সরকার মিয়ানমারের এমন হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম চৌধুরী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফাসহ জর্দান দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা রানির সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে রোহিঙ্গাদের দেখতে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোয়ান বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়া বিবৃতির মাধ্যমে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান রোহিঙ্গা ইস্যুকে গণহত্যা বলেও উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকেও হুঁশিয়ার করেছেন।