Print Date & Time : 26 June 2025 Thursday 3:47 am

ন্যূনতম মজুরি বিষয়ে ঈদের পর আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবি আদায়ে কোরবানির ঈদের পর জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল এক সমাবেশে সিপিবির সহযোগী শ্রমিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার কারখানা মালিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের অত্যাচার, জুলুম, হামলা-মামলা, হুলিয়া কোনো কিছুকেই আমরা তোয়াক্কা করব না। ঈদের পরে শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলন হবে, যে আন্দোলন ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৩ সালকে ছাড়িয়ে যাবে। সেই আন্দোলন সংগঠিত ও সচেতন আন্দোলন হবে।’
মালিকপক্ষ থেকে ন্যূনতম মজুরি ছয় হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি মাঠে না নামি, আন্দোলন না করি, তাহলে মজুরি বাড়বে না। আন্দোলনের জন্য সবাই প্রস্তুত হোন, ঈদ যাবে, ঈদের পরপরই শক্তিশালী আন্দোলন শুরু হবে। ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি আদায় করতে হবে।’
২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর তিন হাজার টাকা মূল বেতন ধরে পোশাক শ্রমিকদের জন্য পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে সরকার। এরপর এবার মজুরি বাড়ানোর জন্য নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যেখানে মালিকরা ন্যূনতম মজুরি ছয় হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন।
ঈদের পরে আন্দোলনের যুক্তি তুলে ধরে জলি বলেন, ‘ঈদের আগে নিশ্চয় আমরা চাকরি হারাতে চাই না, কারণ আমরা জানি যখনই আন্দোলন-সংগ্রাম হয় তখন আপনারা (মালিক) ছাঁটাই করেন। শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন-জুলুম-হুলিয়া চালান। মাস্তান নিয়ে শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি হামলা করেন।’
সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেন, ‘সবার কাছে শ্রমিক শ্রেণির দোহাই দিয়ে বলছি, এখন থেকে প্রতিটি শ্রমিক ভাইকে বলতে হবেÑ১৬ হাজার টাকা মজুরি না নিয়ে আমরা কেউ ঘুমাব না, আমরা কেউ চুপ থাকব না।’
সরকার ও গার্মেন্ট মালিকদের উদ্দেশে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘এখন যদি ১৬ হাজার টাকা না মানো, তাহলে আরও বেশি দিতে হবে। কারণ দিন চলে যাচ্ছে, জিনিসের দাম বাড়ছে, তখন ১৬ হাজার টাকায় রাজি হব না, ২০ হাজার টাকা আদায় করে ছাড়ব।’
জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও শ্রমিকদের কেনার ক্ষমতা বাড়েনি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন চাল, ডাল, তেল, নুন ও সাবানের দাম বছর বছর ৯ থেকে ১০ শতাংশ বাড়ে। মানুষের কেনার ক্ষমতা বাড়ানোর দাবি করেছি, কিন্তু সরকার কেনার ক্ষমতা বাড়ানোর বদলে কমানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছে।’
সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়ে সুপ্রিমকোর্টের কদম ফোয়ারা ঘুরে পল্টন মোড় হয়ে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।