শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্বের মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেট জায়ান্টগুলোকে করের আওতায় বাঁধতে এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করলো অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক করপোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এর সদস্য দেশগুলো।
ওইসিডিভুক্ত ১৩৬টি দেশের প্রতিনিধিরা এই করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের ১৫ শতাংশকে ন্যূনতম কর হিসেবে ধার্য করার বিষয়ে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। পাশাপাশি যেদেশ থেকে এই কোম্পানিগুলো রাজস্ব আয় করবে সেই দেশগুলোর সরকারকে এই কর দেয়ার ব্যাপারে কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করার বিষয়েও একমত হয়েছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো।
বিশ্বের দেশে দেশে ব্যবসা করে অনেক মুনাফা লুটলেও সে সব দেশের ঢিলেঢালা আইনের ফাঁকফোঁকর খুঁজে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার ব্যাপারে কুখ্যাতি রয়েছে অনেক আন্তর্জাতিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানেরই।
অবশ্য বহুজাতিক করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর প্রদানে বাধ্য করতে এই চুক্তি যথেষ্ট নয় বলে সমালোচনা করছেন অনেকেই। তারা বলছেন, ন্যূনতম কর হিসেবে ১৫ শতাংশ খুবই কম এবং এই কর এড়াতেও ঠিকই আইনের ফাঁকফোকর খুঁজে নেবে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
তারপরও এই চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী অনেকেই। ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, আন্তর্জাতিক কর আদায়ের পদ্ধতিকে আধুনিক যুগে উন্নীত করবে এই চুক্তি। এই চুক্তির ফলে ন্যায্য কর আদায়ের একটি সুস্পষ্ট পথ পাবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো। বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলোকে তাদের আয়ের একটি ন্যায্য অংশকে কর হিসেবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোকে দিতে হবে, তারা যেখানেই ব্যবসা করুক না কেন।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক করপোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিগ কর্পোরেশনগুলোর এই ন্যূনতম কর সীমারেখার বিষয়ে কাজ করে আসছে। নতুন এই চুক্তির ফলে বিশ্বের বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর থেকে বছরে অতিরিক্ত ১৫০ বিলিয়ন ডলার কর আদায় করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী ২০২৩ সাল থেকে কর্পোরেট করের এই চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। এর ফলে নিজেদের সীমান্তের ভেতর বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি করে করের আওতায় আনার সুযোগ সৃষ্টি হবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর জন্য। এমনকি যদি ঐ দেশগুলোতে ঐসব কোম্পানির সরাসরি উপস্থিতি নাও থাকে।
এই চুক্তি বিশ্বের টেক জায়ান্ট আমাজন ও ফেসবুকের মতন প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজস্বের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।