পঞ্চগড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি

প্রতিনিধি, পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পঞ্চগড় থানা পুলিশ। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার পর রাতে তাদের আটক করে পুলিশ। পরে ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আাইনে তাদের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জালিয়াত চক্রের মূল হোতা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বাবর আলীর ছেলে ও গণউন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক বেলাল উদ্দীন (৩৮), প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বড়দাপ এলাকার কলিম উদ্দীনের ছেলে মোকসেদুর রহমান (২৮) ও একই উপজেলার ছোটদাপ এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে আহসান হাবিব (২৮)।

পুলিশ ও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। এর মধ্যে পরীক্ষার্থী মকসেদুর রহমান ও আহসান হাবিবের মৌখিক পরীক্ষার খাতার হাতের লেখার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া হাতের লেখার অমিল পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার কথা স্বীকার করেন তারা। প্রায় ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রক্সি পরীক্ষার্থীর মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেয়ার চুক্তি করা হয়েছিল বলেও স্বীকার করেন তারা। এ জালিয়াতির মূল হোতা ছিলেন বালিয়াডাঙ্গীর গণউন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক বেলাল উদ্দীন। এরপর কৌশলে তাকেও ডেকে এনে তিনজনকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে তারা থানাহাজতে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো  হয়।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার সময় তাদের হাতের লেখা দেখে প্রাথমিকভাবে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্য কাউকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং এজন্য তারা মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছেন বলেও স্বীকার করেন। এজন্য তাদের আটক করে রাখা হয়। সবার পরীক্ষা শেষে কৌশলে নিয়োগ পরীক্ষায় এমন জালিয়াতির মূল হোতা বেলাল হোসেনকে ডেকে এনে তিনজনকেই পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।   

উল্লেখ্য, এছাড়া বেলাল উদ্দীন ঋণ প্রদানের শর্ত হিসেবে ব্ল্যাংক চেক গ্রহণ করেন। তার বিরুদ্ধে দুদকসহ বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ তার এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেছেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০