পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিএনপির ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে : ওবায়দুল কাদের

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: মজুতদারি করে যারা নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে, তারা কোথায় সমস্যা সৃষ্টি করছে এবং এদের সঙ্গে রাজনৈতিক যে সম্পর্ক, বিএনপি বিরোধী দল-তারাও উসকানি দিচ্ছে কি না, যোগসাজশ আছে কি নাÑএগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথাসময়ে যথা ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুব মহিলা লীগ এবং মহিলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভার শুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা আছে। তারাই (বিএনপি) সিন্ডিকেট করে সরকারকে বিব্রত করা এবং নির্বাচিত সরকারের যে অগ্রযাত্রা তা বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা চেষ্টা করতে পারে। এটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। এই যে সিন্ডিকেট, এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে সংযোগ আছে কি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলমান এই বৈশ্বিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সংকট, সারা বিশ্বে আজকে যে অস্থিরতা চলছেÑকখনও কখনও মনে হয় গোটা বিশ্বটাই একটা রণক্ষেত্র। এর প্রতিক্রিয়া আমাদের দেশেও হয়। এই বৈশ্বিক সংকট অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এর প্রভাব প্রতিক্রিয়া থাকবেই।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কথা হচ্ছে সরকার বিষয়টাকে কীভাবে মোকাবিলা করছে। আমি মনে করি, এই দেশের ইতিহাসে বিভিন্ন সংকট পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন। যত ক্রাইসিসই আসুক, তিনি মোকাবিলা করেছেন। এখনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তিনি প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে, এখানে সরকার নিষ্ক্রিয় নেই। বড় কথা হলো আপনি বলতে পারেন সরকার এখানে সক্রিয় আছে। প্রধানমন্ত্রী সারাক্ষণ দেশের এই সংকট মোকাবিলায় সময় দিচ্ছেন। আমাদের তো এখানে সংকট মোকাবিলায় কোনো অবহেলা নেই।’

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের ভূমিকা কী, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সরকার কি তাহলে চুপ করে বসে আছে? বাংলাদেশে এই সংকটের মধ্যেও নির্বাচনে তারা আসেনি, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচন যখন হয়েই যাচ্ছে, তখন তারা বলেছিল নির্বাচনের পর মার্চ মাসে দুর্ভিক্ষ হবে। কোথায় দুর্ভিক্ষ? আমাদের পারচেজিং পাওয়ার আছে। আপনি এখনই দেখেন, আলোকসজ্জা শুরু হয়ে গেছে গ্রাম পর্যন্ত। ঈদ শপিং শুরু হয়ে গেছে, হাতে তো পয়স আছে। একটা লোক না খেয়ে মারা গেছে, কোনো উদহারণ দিতে পারবেন?’

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকদের উদ্ধারের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খুবই সক্রিয়, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অত্যন্ত তৎপর, তারা যোগাযোগ রক্ষা করছে। যারা ওখানে আছে, আমাদের ২৩ জন তাদের ইন্সুরেন্সও আছে। তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার সার্বিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আপনারা জানেন সোমালিয়া, যেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই নাজুক অবস্থা। কিছুদিন আগে একটা সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রতি মিনিটে একজন করে মানুষ দুর্ভিক্ষে মারা যায়। সেই দেশে সন্ত্রাসকবলিত দুর্ভিক্ষ থেকেও অনেকেই এই পথে বিপথগামী হয়েছে।’

সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘এখানে আসলে রেন্সম (মুক্তিপণ) আদায়টাই মূল লক্ষ্য। এর আগেও একটা ঘটনা ঘটেছে, সেখানেও লেনদেনের বিষয়টা ঘটেছে। এইখানে তারা সোমালিয়ার উপকূলের দিকে জাহাজ যাচ্ছে। ওখানে গিয়ে হয়তো রেন্সম দাবি করতে পারে, এরকমই শোনা যাচ্ছে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগের কোনো ঘাটতি নেই।’

নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ড. ইউনূস একজন ব্যক্তি; আমি জানতে চাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কে? তিনি তো বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের দেশে আইন আছে, কেউ তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এদের যুক্তরাষ্ট্রের কী দরকার আছে? তারা তো নির্বাচন নিয়ে, ৬ জানুয়ারি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আইন-আদালত নিয়ে যেভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে, সেখানে ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও মামলা চলছে।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখানে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যদি শ্রম আইনে আদালতে মামলা করে, সেখানে কী? এটা আমাদের ব্যাপার, তিনি এই দেশের লোক। এখানে তিনি যদি আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মামলা করার অধিকার অবশ্যই আছে।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০