শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ উৎপাদিত দেশীয় পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি উৎপাদনেও বৈচিত্র্য আনার জন্য শিল্পোদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের তাগিদ দিয়েছেন। গতকাল ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৯’ অনুষ্ঠানে ধারণকৃত এক ভিডিও বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সূত্র: বাসস
রাষ্ট্রপতি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে দেশে উৎপাদিত শিল্প পণ্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি বাংলাদেশ। তাই পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি উৎপাদনেও বৈচিত্র্য আনতে হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপ্রধান শিল্পোদ্যোক্তাদের শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, শিল্পোদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্দিষ্ট কোনো পণ্য বা সেবা খাতের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক গতিধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিল্পোৎপাদনে বহুমুখী ধ্যান-ধারণা প্রয়োগ করতে হবে।
শিল্পায়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের ব্যাপারেও যতœশীল হওয়ার তাগিদ দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে শ্রমিকদের শ্রম ও দক্ষতা অপরিহার্য। এজন্য মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য কর্মসংস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সরকারের একার পক্ষে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ।
সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মাধ্যমে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
তিনি বলেন, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি বড় অংশ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ইকোনমিক জোনে শিল্প নির্মাণ করা হলে কর রেয়াতসহ প্রদেয় নানা প্রণোদনা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সমভাবে ভোগ করবেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্প খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণ, বিনিয়োগ সহায়ক কর ও শুল্ক কাঠামো নির্ধারণ ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষ প্রণোদনাসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোক্তাবান্ধব ও সৃজনশীল কর্মসূচির ফলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের অন্যতম আর্কষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। তিনি সম্মাননাপ্রাপ্ত সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পোদ্যোক্তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও অনুষ্ঠানের সভাপতি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা বক্তব্য দেন।