নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শ্রমঘন শিল্পের পণ্য রফতানিতে বৈচিত্র্য আনতে নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। ওই প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে ১০ কোটি ডলার দিচ্ছে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি পোশাক শিল্পের ছাড়া অন্য শ্রমঘন শিল্পে নতুন ও উন্নততর কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করা হবে। গতকাল বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তথ্যমতে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া প্রকল্পের নাম ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রজেক্ট।’ ওই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্ববাজার দখলের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের চামড়া, পাদুকা ও প্লাস্টিকসহ হালকা প্রকৌশল ও রফতানিমুখী শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। এজন্য দক্ষ শ্রমশক্তি ও উন্নততর কর্মপরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। এতে রফতানিপণ্যে বৈচিত্র্য আসবে। অন্যদিকে শ্রমঘন শিল্পে ৯০ হাজারেরও বেশি নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান অঞ্চলের আবাসিক পরিচালক কিমিয়াও ফ্যানের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘চীনের পরই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ বাংলাদেশ। রফতানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে দেশের রফতানিকে ত্বরান্বিত করা এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। এজন্য তৈরি পোশাক শিল্পের মতো অন্য শ্রমঘন শিল্পগুলোকেও সমানভাবে এগিয়ে নিতে কাজ করা হবে। এ প্রকল্প আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে দেশের অর্থনীতির সম্পর্ক আরও সুসংহত করবে। আগামী দশকে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশকারী তরুণরা আরও উন্নত চাকরি পাবে। শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণেও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে।’
এ প্রকল্পটি বিশ্ব বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় তরুণদের বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এ উদ্যোগ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশে সহায়তা করবে। সেইসঙ্গে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার সক্ষমতা আরও বাড়াবে। এ ছাড়া এটি বিদ্যমান ও নতুন বাজারে প্রবেশ এবং পণ্যের ‘ব্রান্ডিং’ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের এ সহায়তার জন্য বাংলাদেশকে দশমিক ৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। বিনা সুদে ছয় বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরের মধ্যে এ পরিশোধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, দেশের মোট রফতানির প্রায় ৮২ শতাংশ তৈরি পোশাক শিল্পের নিয়ন্ত্রণে। তারপরও তৈরি পোশাক ব্যতীত অন্য শ্রমঘন শিল্পে প্রতিবছর গড়ে তিন লাখ নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সুবিধা, দক্ষ প্রশিক্ষিত জনবল ও কর্ম পরিবেশ পেলে শ্রমঘন শিল্পগুলোও পণ্য রফতানিতে বৈচিত্র্য আনতে পারে।
Add Comment