নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। সেই সঙ্গে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেছে। তবে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ছিল ট্যানারি খাতের শেয়ার। ফলে আলোচিত খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এরপর দর বৃদ্ধির দিক থেকে গতকাল দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাত। গতকাল শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ এবং প্রকৌশল খাত।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল আগ্রহ বেশি থাকা ট্যানারি খাতের শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টির দাম বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভ্রমণ খাতে গতকাল দর বেড়েছে দশমিক ৭০ শতাংশ। খাতটিতে গতকাল মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১টির শেয়ারদর বেড়েছে এবং ১টি ছাড়া বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল।
গতকাল দর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় স্থানে থাকা কাগজ খাতে দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। আলোচ্য খাতে গতকাল ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টি দর বেড়েছে এবং ২টির দর কমেছে। দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে গতকাল চতুর্থ স্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। এছাড়া গতকাল সাধারণ বিমা, আর্থিক, সিমেন্ট, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বস্ত্র এবং ব্যাংক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় পাট খাতে শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে গতকাল শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ৬০ শতাংশ। খাতটিতে গতকাল মোট ৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। গতকাল ২ শতাংশ শেয়ারদর কমে এরপরে ছিল আইটি খাত। গতকাল শেয়ারদর কমায় তৃতীয় স্থানে থাকা সিরামিক খাতে দর কমেছে দশমিক ৯০ শতাংশ।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১১ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হওয়া জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। গতকাল চতুর্থ স্থানে থাকা কাগজ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ১৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৪৫ দশমিক ৬১ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪ দশমিক ১ পয়েন্ট বা দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬৮ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২০৪ দশমিক ১৩ পয়েন্টে।
ডিএসইতে গতকাল ৩৪০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে; যা আগের কার্যদিবস থেকে ৮৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৪২৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার। গতকাল ডিএসইতে ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৩০টির বা ৯ দশমিক ৮০ শতাংশের, শেয়ারদর কমেছে ৫৫টির বা ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশের এবং ২২১টির বা ৭২ দশমিক ২২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৪৭ দশমিক ১২ পয়েন্টে। সিএসইতে গতকাল ১২১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩৩টির আর ৫৮টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল সিএসইতে ৯ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।