পতনের সময় কেউ নিজের লোক থাকে না:মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: যখন পতনের সময় আসে তখন কেউ নিজের লোক থাকে না, এই মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে কারসাজির চেষ্টা শুরু করেছে। পুলিশ, এসপি, ডিআইজি বদলি করে, ম্যাজিস্ট্রেট, ইউএনও, ওসি বদলি করে। সব নিজের লোক বসাইতে চায়। এটাই হয়। যখন পতনের সময় আসে তখন কেউ নিজের লোক থাকে না।’

গতকাল সোমবার ঢাকার নয়াপল্টনে বিক্ষোভ মিছিলের আগে সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকীসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এবং যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এই বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে কারসাজির চেষ্টা থেকে সরকার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। বিএনপির সামনে প্রতিরোধ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এইবার ভয় পাইছে, ভালোমতোই ভয় পাইছে। এখন আর কথাবার্তাও সামাল দিতে পারে না। এমন এমন কথা বলে যে দেশের সার্বভৌমত্বের বাইরে চলে যায়।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমেরিকা থেকে ফিরে এসে এমন ভয় পাইল, বলে আমাকে সরায়ে দিতে পারে। আবার বলে, সেন্টমার্টিন বিক্রি করে দিলে নাকি সে ক্ষমতায় থাকতে পারে। সেন্টমার্টিন কি কারও বাবার সম্পত্তি? সেন্টমার্টিন এই দেশের মাটি।

এই দেশের মানুষ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে। এটা বিক্রি করে দেয়া এতটা সহজ নয়। কতটা দায়িত্বহীন হলে এমন উক্তি করতে পারে, যাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ক্ষুণœ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা যে এখনই বিভিন্ন সমাবেশে বক্তব্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইছেন, সে প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই নৌকায় ভোট চাইতে শুরু করেছে। মানুষ এখন গান গাইছে, আগে জানলে তো এই ভাঙা নৌকায় উঠত না। আওয়ামী লীগ সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর কথা বলে, সেখানেই বলা ছিল, একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের দুর্নীতির কারণে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কৃষক এক মণ ধান বিক্রি করে এক কেজি মরিচ কিনছে। গত এক মাসে বিএনপির ৩৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাহলে বুঝতেই পারছেন তারা কী করতে যাচ্ছে। প্রতিরোধ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যতই দিন যাবে ততই দেশের মানুষের ও গণতন্ত্রের ক্ষতি হবে। তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যেই নাম বলেন না কেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের হাতে ক্ষমতা দিন। এটাই একমাত্র পথ।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মামলা দিয়ে ও হামলা করেও বিএনপির আন্দোলন ঠেকানো যাচ্ছে না। আন্দোলন শুধু বিএনপি ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য নয়। মানুষের ভোটের অধিকার, বাঁচার অধিকার, কথা বলার অধিকার, ১ হাজার টাকায় মরিচ না খেয়ে ১০০ টাকায় মরিচ খাওয়ার অধিকারÑএসব কারণেই আন্দোলন।

বিক্ষোভ মিছিলের আগে বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতিরা ওই সমাবেশে বক্তব্য দেন। সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল শান্তিনগর মোড় ঘুরে আবার নয়াপল্টনে এসে এই কর্মসূচি শেষ করা হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০