নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজার প্রধান সূচক ও লেনদেনের উত্থানের মধ্য দিয়ে গত সপ্তাহ পার করেছে। সপ্তাহটিতে প্রধান সূচক বৃদ্ধির সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে। এ সময় লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে থাকা পাট খাতে বড় উত্থান হয়েছে। ফলে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। বিপরীতে গত সপ্তাহে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে। ফলে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর বেশি কমেছে। এছাড়া দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ট্যানারি খাতের শেয়ার। টেলিকমিউনিকেশন ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতের শেয়ারদর কমা বা বৃদ্ধির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৩৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ট্যানারি খাতে দর বেড়েছে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ২০ শতাংশ বা ১৫০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ১ দশমিক ৭০ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল সেবা ও আবাসন খাতের শেয়ার। এ খাতে লেনদেন হয়েছে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ বা ২২৩ কোটি টাকার। খাতটি লেনদেনে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে ভ্রমণ খাতে। এ খাতে ৪ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে লেনদেন হয়েছে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ বা ১৮৫ কোটি টাকার। শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমে সিরামিক খাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ১০ শতাংশ বা ৯০ কোটি টাকার। শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে থাকা জীবন বিমা খাতে ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ বা ১৯৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
অপর দিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আইটি খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২১ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৬১৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কিন্তু খাতটিতে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। এর পরের স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৩৫৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কিন্তু এ খাতে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গেল সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৮৯৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৬৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকার বা ৭৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৪০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৪০১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৭৬টির, দর কমেছে ৫৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪৪টি কোম্পানির। লেনদেন হয়নি ২৩টি কোম্পানির।
আলোচ্য সময়ে ডিএসইর প্রধান সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ২১৪ দশমিক ২০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই৩০ সূচক ১০ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস ১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২ হাজার ১৯৮ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৪৭ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে।
সপ্তাহ শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ২১ পয়েন্টে।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১১২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৭৩ কোটি তিন লাখ টাকা বা ৬৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ২২৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৫২টির, দর কমেছে ৪২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩৪টি কোম্পানির।
পাঁচ ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক সিএএসপিআই দশমিক শূন্য আট শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩০৪ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে। সিএসই৩০ সূচক দশমিক ২১ শতাংশ, সিএসইসিএক্স সূচক দশমিক শূন্য ৯, সিএসআই সূচক দশমিক ১৪ ও সিএসই এসএমইএক্স সূচক ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৩ হাজার ৩৭১ দশমিক ১১ পয়েন্টে, ১০ হাজার ৯৭৩ দশমিক শূন্য ১, ১ হাজার ১৫০ দশমিক ৩৮ ও ১ হাজার ৭৪৮ দশমিক ৭১ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই৫০ সূচক দশমিক শূন্য ১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৩১৩ দশমিক ২৩ পয়েন্টে।