Print Date & Time : 27 June 2025 Friday 5:59 pm

পতন শেষে বাজারে ফিরছেন বিনিয়োগকারীরা

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পতনের রেশ কাটিয়ে আবারও পুঁজিবাজারে ফিরতে শুরু করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে বদলে গেছে ব্রোকারেজ হাউজের চিত্র। কয়েকদিন আগের হাউজগুলোতে ছিল সুনসান নীরবতা। গতকাল বৃহস্পতিবার হাউজগুলোতে দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র।

গতকাল মতিঝিলের ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। অথচ কিছুদিন আগে বেশিরভাগ হাউজে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যেত না। এসব হাউজের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, ব্রোকারেজ হাউজে ফিরলেও তাদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে। বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও তা স্থিতিশিল হবে কি নাÑএ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে। তারা একটি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার চান।

অন্যদিকে হাউজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, দীর্ঘদিন অসংখ্য বিও একটিভ ছিল না। বর্তমানে সেসব বিও সচল হচ্ছে। পুরুষের পাশাপাশি সচল হচ্ছে নারীদের বিও। এটাকে বাজারের শুভ লক্ষণ বলে মনে করছেন ব্রোকাজের হাউজের মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই।

জানতে চাইলে শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিল রিজভী শেয়ার বিজকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা ফিরে আসছেন- এটা পুঁজিবাজারের জন্য শুভ লক্ষণ। একই সঙ্গে এটি আমাদের জন্যও ভালো খবর। কারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেন না করলে আমাদের আয় কমে যায়। তখন আমাদের ব্যবসা চালাতেও হিমশিম খেতে হয়।’

এ প্রসঙ্গে স্টালিং ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নিবাহী কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমাদের মূল ব্যবসা হচ্ছেÑক্লায়েন্টদের থেকে পাওয়া কমিশন। ফলে তারা শেয়ার কেনাবেচা না করলে আমাদের ব্যবসা মন্দা যাবে, আবার তারা তারা একটিভ থাকলে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে, এটাই স্বাভাবিক।’

গত ২০১০ সালে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি যখন খুবই ভালো ছিল তখন ডিএসইর দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। সে সময় ঢাকার প্রতিটি হাউজে গড়ে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন হতো। পরবর্তীতে বাজার মন্দা যাওয়ায় তা অনেক নিচে নেমে যায়। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে ব্রোকারেজ ব্যবসায়। এখন পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় ব্যবসাও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা লেনদেন না করলে ব্যবসা চালিয়ে নিতে আমাদের খুব বেশি বেগ পেতে হয়। সেই সময় আমরা বাধ্য হয়েই কর্মী ছাঁটাই করি। এক সময় আমাদের হাউজে লেনদেন হতো ১০০ কোটি টাকা। পরে তা অস্বাভাবিক হারে কমে যায়। এখন বাজার ভালোর দিকে যাচ্ছে। আশা করছি আমাদেরও সুদিন ফিরে আসবে। তবে এর জন্য দরকার ধারাবাহিক স্থিতিশীলতা।’

জানা যায়, ২০১০-২০১১ সালে পুঁজিবাজার যখন ঊর্ধ্বমুখী ছিল তখন হাউজগুলো বিভাগীয় শহর ও জেলা পর্যায়ে তাদের শাখা খোলেন। কিন্তু বাজারে ধস নামার পর থেকে কমতে থাকে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর আয়। কর্মী ছাঁটাই করে ব্যয় কমিয়ে এনে ব্যয় কমায় হাউজগুলো। এই সময় কয়েকটি হাউজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে এই পরিস্থিতি নেই। ডিএসইর দেওয়া তথ্য মতে বর্তমানে ২৫০টি ব্রোকারেজ হাউজের মধ্যে ২৩৪টি হাউজ তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।