নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চিটাগং ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড স্যানিটেশন (সিডব্লিউএসএইএসপি) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত দৈনিক সাড়ে চার কোটি লিটার পাম্পিং ক্ষমতাসম্পন্ন পতেঙ্গা বুস্টার পাম্প স্টেশন উদ্বোধন করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এতে চট্টগ্রাম মহানগরীর দক্ষিণাংশ (বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা) এলাকায় পানি সরবরাহ বাড়বে।
গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরের রেডিসন ব্লু-তে ‘পতেঙ্গা বুস্টার পাম্প স্টেশন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় মদুনাঘাটে করা হয়েছে পানি শোধনাগার। একইসঙ্গে নগরীর মধ্যে ১৬০ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বন্দর এলাকায় নির্মিত হয়েছে বুস্টার পাম্প স্টেশন। মদুনাঘাট পানি সরবরাহ প্রকল্পের পানি পাইপলাইনে গিয়ে কালুরঘাট বুস্টার স্টেশন প্রবেশ করবে। সেখান থেকে পাম্পিং করে অর্ধেক পানি নিয়ে যাওয়া হবে নগরীর উত্তর পূর্বাংশে চান্দগাঁও, মোহরাসহ বৃহত্তর বাকলিয়া এলাকায়। বাকি অর্ধেক সরাসরি যাবে বন্দর এলাকায় অবস্থিত বুস্টার স্টেশনে। সেখান থেকে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে পতেঙ্গা পর্যন্তু নিয়ে যাওয়া হবে পানি।
বর্তমানে ওই এলাকায় দেড় কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হয়। বুস্টার স্টেশনটি আগামী মার্চ থেকে পুরোপুরি কার্যকর হবে। তখন কর্ণফুলী ফেজ-২ প্রকল্পের পানিও যুক্ত হবে।
বর্তমানে দৈনিক ৩৬ কোটি লিটার পানির উৎপাদন ক্ষমতা থাকা ওয়াসা পুরো নগরে পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। তাই রেশনিং ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করছে ওয়াসা। পতেঙ্গা, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় এখনও নিয়মিত পানি পাওয়া যায় না। পতেঙ্গায় পানি সরবরাহ পুরোদমে শুরু হলে ওয়াসাকে অতিরিক্ত আরও দৈনিক তিন কোটি লিটার পানি অন্য এলাকা থেকে জোগান দিতে হবে। যে এলাকা থেকে পানি দেবে সেখানে আবার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এজন্য বন্ধ থাকা টিউবওয়েল চালু করার চিন্তা করছে ওয়াসা। তবে মার্চে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের ফেজ-২ চালু হলে অতিরিক্ত ১৪ কোটি লিটার পানি যুক্ত হবে। তখন পুরো শহরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবে বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
পতেঙ্গা বুস্টার স্টেশনের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু নতুন পাইপলাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় পূর্ণ ক্ষমতায় ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। এখন পুরোনো পাইপলাইন দিয়ে দৈনিক দেড় কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন পাইপলাইনে দৈনিক সাড়ে চার কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হবে। বুস্টার স্টেশনের আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে এটি চলবে। ২৮৭০ ঘনমিটার ক্ষমতাসম্পন্ন রিজার্ভার ও বুস্টিং পাম্প সংযুক্ত রয়েছে। চারটি পাম্পের মধ্যে দুটি স্ট্যান্ডবাই অবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ করা হবে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি জেনারেটর সংযুক্ত করা হয়েছে। আধুনিক পাম্পের মাধ্যমে বুস্টার স্টেশনটি পরিচালনা হবে বিধায় পুরো এলাকায় পানির চাপ একই থাকবে।