সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম:ক্রমবর্ধমান কনটেইনার হ্যান্ডলিং চাপ সামাল দেয়ার জন্য পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে (পিসিটি) নির্মাণ করা হয়। এটি এক বছরের বেশি সময় ধরে অলস পড়ে আছে। এর মধ্যে কয়েকটি জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পিসিটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছিল। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং অপারেটর নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া এখনও শেষ করতে পারেনি। ফলে পুরোপুরি প্রস্তুত থাকার পরও অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করতে দেরি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, চবকের অর্থায়নে প্রায় ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে পিসিটির অবকাঠামোগত নির্মাণ সম্পন্ন করে। এর মধ্যে ১৬ একরের ব্যাকইয়ার্ড সুবিধাসহ ৬০০ মিটার জেটি নির্মাণ করা হয়। এই টার্মিনালের ইয়ার্ডে বছরে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। পিসিটির জেটিতে ১৯০ মিটার লম্বা ও ১০ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের ৩টি কনটেইনারবাহী জাহাজ বার্থিং দেয়া যাবে। এছাড়া ২২০ মিটারের একটি ডলফিন জেটিও প্রকল্পটিতে রয়েছে। টার্মিনালটি গত ২০২২ সালের জুলাই মাসে পরীক্ষামূলকভাবে উদ্বোধনের দিন ঠিক হলেও পরে তা স্থগিত করা হয়। এরপর চলতি বছরের শুরুর দিকে মিয়ানমার থেকে ২ হাজার ৬৫০ টন আতপ চাল নিয়ে আসা এমসিএল-১৯ নামের জাহাজটিকে পিসিটিতে ভেড়ানো হয়। এরপর আর কোনো জাহাজ ভেড়ানো হয়নি।
পিসিটি পুরোদমে চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত ছোট গিয়ারলেস (নিজস্ব ক্রেন নেই এমন) জাহাজ কিংবা বিশেষ জাহাজগুলো বার্থিং দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এখান শুরুতে গিয়ারলেস বাল্ক ক্যারিয়ার হ্যান্ডলিং করা হলেও পরে এই টার্মিনালে পুরোদমে কনটেইনার ভেসেল হ্যান্ডলিং করা হবে। অবশ্য ইকুইপমেন্ট স্থাপন এবং অপারেটর নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া চলমান আছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘পিসিটিকে আমরা বসিয়ে রাখিনি। এখন তো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে জাহাজের আগমন কমেছে। প্রায়ই বার্থ খালি থাকছে। ফলে প্রয়োজন হলেই পিসিটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে অপারেটর হিসেবে সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আর এ টার্মিনালটি সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশিপ মডেলে চালু হবে। এর জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ে চালুর ঘোষণা আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি অপারেটর টার্মিনাল অপারেট করবে আর চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ করবে। আমরা এরই মধ্যে ব্যাপক বিদেশি বিনিয়োগের অফার পাচ্ছি। বিদেশিরা যখন আসবে টেকনোলজিও আসবে। ল্যান্ড লর্ড সিস্টেমে দেশি ও বিদেশি সবাই আসবে। যে-ই আসুক না কেন যোগ্যতার ভিত্তিতেই আমরা পার্টনারশিপ করব। আমাদের সঙ্গে পার্টনারশিপ করার জন্য বিওটি সিস্টেম কিংবা বিভিন্ন কায়দায় সুযোগ রয়েছে।’