Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:46 pm

পদ্মার তীরে ভাঙন

প্রতিনিধি, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এতে ডুবে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ চর ও নি¤œাঞ্চল। সেই সঙ্গে নদীতে পানি বাড়ায় নদীতে স্রোত ও ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে ৬ ও ৭নং ফেরিঘাটের অনেকটা এলাকা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে চলে গেছে কয়েকটি বসতবাড়ি ও দোকানপাট। বিআইডব্লিউটিএ প্রাথমিকভাবে কিছু বালুর বস্তা ফেললেও তা অনেক কম। এ অবস্থায় শত শত বসতবাড়ি, ফসলি জমি, দোকানপাট, স্কুল ও ফেরিঘাটমুখী পাকা সড়ক ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটসংলগ্ন সাত্তার মেম্বারপাড়ার মো. কাদের ব্যাপারী দুবার পদ্মার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। কয়েক দিন ধরে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। আতঙ্কে রাত জেগে ছিলেন তিনি। শুধু কাদের ব্যাপারী নন, তার মতো আরও শত শত পরিবারের একই অবস্থা।

দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার বাসিন্দা নেকবার মোল্লা বলেন, ‘ভাঙনের কারণে ঘর সরাতেই দিশাহারা। নির্বাচনের সময় যারা ভোট চাইতে আসেন, ভাঙনের সময় তাদের আর দেখা যায় না। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে বড় মানচিত্র থেকে দৌলতদিয়ার নাম মুছে যাবে। পথে বসবে ঘাটের কয়েকশ দোকানি। ঘরবাড়ি হারাবে শত শত পরিবার। নদীতে বিলীন হবে স্কুল, মসজিদ, মন্দিরসহ অনেক স্থাপনা।’

দিকে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী গত শনিবার সন্ধ্যার পর দৌলতদিয়ার ভাঙনকবলিত ফেরিঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয়রা ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে সংসদ সদস্যের কাছে দাবি জানান। পরিদর্শন শেষে সংসদ সদস্য বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।

তিনি বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে ফেরিঘাট এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করতে হবে। অন্যথায় এখানকার শত শত মানুষ মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে। কিছুদিন আগে এখানে প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু সেই কাজ নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। আগামীতে যে কাজ করা হবে, সেটার জন্য আমাকে ও স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানানো হয়।’

এমপি বলেন, ‘ভাঙনের খবর শোনামাত্রই আমি চলে এসেছি। ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝখানে যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তা কখনও কেউ কল্পনা করেনি। বর্তমানে পদ্মায় স্রোত তেমন নেই, তবুও ভাঙন শুরু হয়েছে। আমি সংসদে এবার নদীশাসনের কথা বলেছি। নদীশাসনের বাজেট পাস হচ্ছে। আমরা আশা করছি, বাজেট দ্রুত পাস হবে এবং নদীশাসনের কাজও শুরু হবে।’

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, ‘দৌলতদিয়া ঘাট নিয়ে সরকারের বড় পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে নদীবন্দর করার কথা ভাবছে সরকার। এর আগে যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে, সেটির বরাদ্দ আরও বাড়বে, তাই এখনই কাজ শুরু হচ্ছে না। ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’