পদ্মার ভাঙনে এক ইউনিয়নের ১৩ মৌজার ১২টিই বিলীন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: পদ্মা নদী একেক সময় একেক রূপে নিজের অবস্থান জানান দেয়। এবার এই নদীর ভয়াল রূপ দেখছে মানিকগঞ্জ। এই জেলার হরিরামপুরের বুক চিড়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। উত্তরপাড়ে ১০টি এবং দক্ষিণপাড়ে তিনটিসহ মোট ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে এই উপজেলায়। যার মধ্যে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টির মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে ১২টি মৌজা।

নদীর দক্ষিণপাড়ের ইউনিয়নগুলোর অধিকাংশই নদীতে বিলীন হয়েছে অনেক আগেই। তবে দ্রুত সময়ের ভেতর ভাঙনকবলিত অবশিষ্ট অংশটুকুকে রক্ষা করা না গেলে জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বাকিটুকু। হরিরামপুর উপজেলা গঠিত হয়েছে গালা, হারুকান্দি, গোপীনাথপুর, রামকৃষ্ণপুর, চালা, আজিমনগর, বয়ড়া, বাল্লা, কাঞ্চনপুর, বলড়া, ধুলশুড়া, সুতালড়ি এবং লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন নিয়ে। পদ্মা নদীর দক্ষিণপাড়ের তিনটি ইউনিয়নের প্রায় দুটিই বিলীন এবং অবশিষ্ট আছে মাত্র একটি। আর নদীর উত্তরপাড়ের ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার ১২টি মৌজা পদ্মায় ইতোমধ্যে বিলীন হওয়ার পর বর্তমানে শেষ মৌজা (গৌড়বড়দিয়া) ২নং ওয়ার্ড/ ৩নং ওয়ার্ডের তীরবর্তী মালুচি ও কুশিয়ারচরেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ভাঙনকবলিত ইউনিয়নের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ এরই মধ্যে পদ্মা নদীতে বিলীন হয়েছে। গত কয়েক দিনের নতুন এই ভাঙনের কবলে পড়ে পদ্মা তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছে। বাড়িঘর ছাড়াও এই ভাঙনের মুখে রয়েছে গায়েনবাড়ি মসজিদ, হোসেন শাহের মাজার ও মালুচি মসজিদ। ভাঙন রোধে দ্রুত সময়ের ভেতর স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ না করলে বাকি অংশটুকুও নদীতে বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে।

কাঞ্চনপুর ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের প্রায় ৭৫ ভাগ পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে, সর্বশেষ যে অংশটুকু আছে তাও যে কোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়বে। ভাঙন দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জিওব্যাগ ফেলে তাদের দায়সারা কাজ করা হয়। আমরা চাই বাকি অংশটুকু ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ এবং তা যতটা দ্রুত সম্ভব । সংশ্লিষ্ট ভাঙন কবলিত কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রূপক বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে পদ্মার ভাঙনে আমার ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টিই নদীতে বিলীন হয়েছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ও স্রোতের কারণে বিল্লাল মেম্বারের বাড়ির সামনে জিওব্যাগ ধসে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনও প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায় জিওব্যাগ ফেলেনি। আমি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বাপাউবোর এসও-কে বিষয়টি অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে হরিরামপুরের কুশিয়ারচর/ মালুচি এলাকায় দ্রুত জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে বেশ কয়েক বছর আগে হরিরামপুর উপজেলার ধূলশুড়া ইউনিয়ন থেকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত তীর রক্ষায় শত কোটি টাকার জিওব্যাগ ফেলে অস্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধের কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্বেও এই ভাঙন দেখা দিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০