প্রতিনিধি, শরীয়তপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছেছে প্রথম ট্রেনটি। ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৩টায় ট্রেনটি মাওয়া স্টেশনে পৌঁছায়। এর আগে গতকাল বেলা ১টা ২১ মিনিটে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামসহ অতিথিদের নিয়ে ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর উদ্দেশে পরীক্ষামূলক সাত বগির বিশেষ ট্রেনটি ছেড়ে যায়।
যাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এক এক করে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে আজ পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে। ওই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন যাবে। এর জন্য ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নুর-ই-আলম
চৌধুরী, সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, ইকবাল হোসেন ও সাগুফতা ইয়াসমিন, আবদুস সোবহান, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহম্মেদ বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শুরু করতে আমাদের তিন মাস দেরি হয়েছিল। তারপরও সময়মতো কাজ শেষ করতে পারায় আমরা আনন্দিত। ইতোমধ্যে আমাদের এই অংশের কাজের ৯২ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।’
পদ্মা অতিক্রম করে প্রথম ট্রেনটি চালিয়ে নিয়ে যান রবিউল আলম (৪৩)। পরীক্ষামূলক এই ট্রেন চলাচলের জন্য সোমবার রাতে বিশেষ ট্রেনটি সৈয়দপুর থেকে ঈশ্বরদী, পোড়াদাহ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর হয়ে ভাঙ্গা স্টেশনে আসে।
পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্প সূত্র জানায়, যাত্রীদের ট্রেনে চলাচলের জন্য ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার রেলপথ প্রস্তুত করা হয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে চারটি স্টেশন ও একটি জংশন। স্টেশনগুলো হলোÑভাঙ্গা স্টেশন, ভাঙ্গা জংশন স্টেশন, শিবচর স্টেশন, পদ্মা স্টেশন ও মাওয়া স্টেশন। ৪২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে ট্রেনটির সময় লাগবে ২ ঘণ্টা।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল বাস্তবায়ন করতে ১০০ কোচ কেনা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি কোচ দেশে পৌঁছেছে। বাকি ৫৫টি দ্রুতই পৌঁছবে।