শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ: বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। গত বছরের ২৩ আগস্ট পদ্মা সেতুতে শেষ রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। এরপর সেতুটি মাওয়া-জাজিরা সড়কপথে সংযুক্ত হয়। চলতি বছরের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে চলছে শেষ সময়ের কাজ। ফেব্রুয়ারি মাসের অগ্রগতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরই মধ্যে মূূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৯৭ শতাংশ।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, আগামী ২৩ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে এখন চলছে শেষ পর্যায়ের কর্মযজ্ঞ। মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৭ শতাংশ। বর্তমানে সেতুতে কার্পেটিং তথা এজফল্ট কাজের অগ্রগতি হয়েছে ২৭ দশমিক ৯৭ ভাগ, ভায়াডাক্টে কার্পেটিং ৫৬ দশমিক ২২ শতাংশ, ওয়াটারপ্রুফিং ওয়ার্কের অগ্রগতি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৮৪ ভাগ, গ্যাসের পাইপলাইনের অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ দশমিক ৯৮ ভাগ, ৪০০ কেভি টিএল প্ল্যাটফর্ম ৭৬ শতাংশ। মার্চ থেকেই সেতুজুড়ে স্থাপন করা হবে ল্যাম্প পোস্ট এবং দুই পাড়ে দুটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশন। রেলওয়ে ভায়াডাক্টে প্যারাপেটের অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ শতাংশ।
তিনি আরও জানান, মার্চ ও আগামী এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন হবে। এপ্রিলে মেমব্রেন ও অ্যালুমিনিয়াম রেলিংয়ের সব কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৩ জুন পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উš§ুক্ত করে দেয়া হবে।
এদিকে পদ্মা সেতুকে ঘিরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা বাড়তে শুরু করেছে, বাড়বে কর্মসংস্থানও। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় করা হয়েছে ২৬ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৩১ কোটি টাকা।
সর্বশেষ সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব অনুসারে, আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। এর পরও প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর থাকবে। তবে সে সময়টা সেতুর কোনো ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামত ও ঠিকাদারের পাওনা মেটানোর জন্য নির্ধারিত রয়েছে।
পদ্মা সেতুটি দ্বিতলবিশিষ্ট। এর ওপর দিয়ে চলাচল করবে যানবাহন, আর নিচ দিয়ে চলবে রেল। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। গোটা বাংলাদেশের মানুষ এখন সেতুটি চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। দ্রুত গতিতে কাজ চলায় ও জুনে খুলে দেয়ার খবরে খুশি পদ্মাপারের সব শ্রেণির মানুষ। খুলছে অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের দ্বার। আরও সহজ হবে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ। এ অঞ্চল হবে দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোন।