নিজস্ব প্রতিবেদক: মেয়াদ বাড়ল পদ্মা সেতু প্রকল্পের। সেই সঙ্গে বাড়ল ব্যয়ও। গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধন) প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী, দুই হাজার ৪১২ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ কোটি টাকা। একই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পটির মেয়াদ চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে ১৪টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলোÑসরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময় ভ্যাট ও আয়করের হার বৃদ্ধি; মূল সেতু ও নদীশাসন কাজের জন্য নিয়োজিত পরামর্শকের ব্যয় বৃদ্ধি; জাতীয় মহাসড়ক এন-৮-এর কালভার্ট ও সড়কাংশ বর্ধিতকরণ; সেতুর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং আনুষঙ্গিক সিভিল কাজের জন্য অতিরিক্ত কাজ সম্পাদন; পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ব্যয়; বৈদেশিক মুদ্রার মান ওঠানামা; মূল সেতু ও নদীশাসন কাজের ঠিকাদারগণ কর্তৃক অনিষ্পন্নকৃত দাবি বাবদ অর্থের সংস্থান; মূল সেতুর পাইলের ডিজাইন পরিবর্তন; ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন টাওয়ারের ফাউন্ডেশন প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়; মাওয়া প্রান্তে নদীর গভীরে সৃষ্ট গর্ত ভরাটকাজ; কাঁঠালবাড়ি থেকে বাংলাবাজার ফেরিঘাট স্থানান্তর করতে ব্যয়; মাওয়া নদীশাসন কাজের ডিজাইন পরিবর্তন; জিও ব্যাগের সাইজ পরিবর্তনের কারণে ব্যয় বৃদ্ধি এবং মাঝিকান্দি থেকে শিমুলিয়া পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ ফেরি চ্যানেল ড্রেজিং, ক্লোজার ড্যাম ও সার্ভে ভ্যাসেল ক্রয়।
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। পরদিন ২৬ জুন থেকে এটি যান চলাচলের জন্য উš§ুক্ত করা হয়েছে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল অনুমোদিত অর্থ ছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পরবর্তীকালে প্রথম দফায় এ অর্থ দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা করা হয়। এরপর দ্বিতীয় সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ এবং বিশেষ সংশোধনী করে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা করা হয়।
পদ্মার ওপর ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার (মূল সেতু ৬.১৫ কিলোমিটার ও ভায়াডাক্ট ৩.৬৮ কিলোমিটার) দৈর্ঘ্য এবং ২২ দশমিক ১০ মিটার প্রস্থবিশিষ্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু নির্মাণ এটি।
মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরÑএ তিন জেলার লৌহজং, শ্রীনগর, জাজিরা ও শিবচর উপজেলায় মূল অনুমোদিত প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়।