নিজস্ব প্রতিবেদক: পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সামগ্রী দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা অংশে একটি জাদুঘর স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিভিন্ন ছবিসহ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেতুর কলা-কৌশলীদের ছবিও সে জাদুঘরে স্থান পাবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা, কর্মচারী, প্রকৌশলীসহ যারা কাজকর্মের সঙ্গে ছিলেন, তাদের সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া সচিব-মন্ত্রী সবার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ছবি তুলবেন। দরকার হলে গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে ছবি তুলবেন। শুধু ছবি তোলা নয়, সেই সঙ্গে একটি জাদুঘরও তৈরি করা হবে। সেই জাদুঘরে ছবিগুলো রাখা হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বড় বড় সেতুর পাশে মিউজিয়াম থাকে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল খরচ দিয়েই নির্মাণ করা হয়েছে পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুর ব্যয় সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, খরচ বেশি হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামীতে হাওর অঞ্চলের সব সড়ক এলিভেটেড বা উড়াল সড়ক নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হাওরের সড়কে ছোট কালভার্ট নির্মাণ না করে বড় ব্রিজ করারও নির্দেশনা দেন। হাওর এলাকায় ভবিষ্যতে যে সড়ক হবে, সেগুলো উড়াল সড়ক করা হবে। পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে কালভার্টের পরিবর্তে ব্রিজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল একনেক সভায় ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১০ হাজার ৮৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ৫ হাজার ১৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৯৫৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৭৫৬ কোটি টাকা।
প্রকল্পগুলো হলো নলকা-সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ শহর অংশ (শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ থেকে কাটা ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত) ৪ লেনে উন্নীতকরণ ও অবশিষ্ট অংশ ২ লেনে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প; বগুড়া শহর থেকে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন গৌরীপুর-আনন্দগঞ্জ-মধুপুর-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ প্রকল্প, বরিশাল লক্ষ্মীপাশা-দুমকী জেলা মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে রাঙ্গামাটি নদীর ওপর গোমা সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরীগঞ্জ জেলা মহাসড়ক প্রকল্প, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি (সংশোধিত ৪৬টি) উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প; জ্বালানি, মর্ডানাইজেশন অব পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন-স্মার্ট গ্রিডস ফেজ ১ প্রকল্প, মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি ইনহানসিং অব বিআরইবি নেটওয়ার্ক প্রকল্প, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (ষষ্ট পর্যায়) প্রকল্প এবং রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (আরএমইউ) স্থাপন প্রকল্প।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, ‘রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (আরএমইউ) স্থাপন’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ অর্থ সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে।
