পদ্মা সেতু থেকেই এক শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়বে: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল অথবা মেট্রোরেলের মতো মেগা প্রকল্পগুলো আমাদের স্বপ্ন, এগুলো এখন বাস্তবায়নের পথে। এগুলো যখন বাস্তবায়িত হয়ে যাবে তখন আমাদের প্রবৃদ্ধি আরও অনেক বেড়ে যাবে। শুধু পদ্মা সেতু থেকেই এক শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
গতকাল সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থমন্ত্রীর নিজ দফতরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেন্জি তেরিংকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা আমাদের জন্য অন্যতম হুমকি। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার জন্য দায়ী নয়, আমরা কার্বন নিঃসরণ করি না। ভারত, চীনসহ কয়েকটি দেশ কার্বন নিঃসরণ করে, অথচ এর ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। তিনি বলেন, দেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে সরকার কাজ করছে। জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমে সরকার জোর দিচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে অর্থনৈতিক খাতে উন্নতিসাধন করে চলেছে। চলতি অর্থবছরেই আমরা আট দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে আট দশমিক ৩০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি, যা ২০২৪ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ১০ শতাংশ এবং সেটা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বিশ্বে যে কয়েকটি দেশের রফতানি আয় খুব দ্রুত বাড়ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এ ক্ষেত্রে অগ্রসরমাণ অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। সব মিলিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশ এখন ৪২তম বড় রফতানিকারক দেশ, অন্যদিকে আমদানিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৩০তম। সুতরাং বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত সুন্দর এবং অপার সম্ভাবনার দেশ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে জনমিতিক লভ্যাংশের ‘ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট’ সুযোগ বিদ্যমান। ২০৩০ সাল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। চীন, ভারত ও এশিয়ার অন্যান্য ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে। ২০৩২ সালে পৃথিবীতে এক নম্বর দেশ হবে চীন, দুই নম্বর হবে আমেরিকা, তিন নম্বর হবে ভারত, চার নম্বর হবে জাপান ও পাঁচ নম্বর হবে জার্মানি। চীন, ভারত ও জাপান এ তিনটি বৃহৎ অর্থনীতির দেশের মাঝে থাকবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ ও গ্লোবাল আউটসোর্সিংয়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। সুতরাং কৌশলগত কারণেই বাংলাদেশকে এড়িয়ে বিশ্বের সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে প্রকল্পে অপচয় হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের বিচ্যুতি ও অপচয় কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার। পদ্মা সেতু, মাটির নিচের টানেল ও মেট্রোরেলের মতো বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতাও আমাদের ছিল না। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে এটা কম হয়, সীমার বাইরে না যায়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীও চেষ্টা করছেন এটা যেন সীমার বাইরে না যায়, সীমা অতিক্রম না করে। আস্তে আস্তে আমরা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করব, তখন প্রকল্পে অপচয় একেবারেই কমে আসবে। যত দিন যাবে, ততই আমাদের অভিজ্ঞতা বাড়বে। আমাদের দেশীয় ঠিকাদাররাও তাদের কাজে শক্তিশালী হবে। যেখানে আমাদের সংশয় দেশীয় ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করতে পারব না, তখন বিদেশি ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাচ্ছি। আমরা জাইকাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি, চায়নাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিÑযেখানে সক্ষমতা নেই সেখানে। পাশাপাশি আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করছি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০