পরমাণু বিদ্যুৎ ব্যবসা বিক্রির পরিকল্পনা তোশিবার

শেয়ার বিজ ডেস্ক; গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রে পরমাণু বিদ্যুৎ ব্যবসায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় জাপানের ইলেকট্রনিকস, কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তোশিবা করপোরেশনকে ৬০৩ কোটি ডলার রাইটডাউন করতে হচ্ছে। এ কারণেই তোশিবা চলতি অর্থবছরে ৩০৪ বিলিয়ন ডলার নিট লোকসানে রয়েছে। লোকসান কাটিয়ে উঠতে যুক্তরাষ্ট্রের ওই পরমাণু বিদ্যুৎ ব্যবসা বিক্রি করতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর বিবিসি।

তোশিবার প্রেসিডেন্ট সাতোশি সুনাকাওয়া জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু ব্যবসার অধিকাংশ বা সব শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, লোকসান কাটিয়ে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।

বড় অঙ্কের এ লোকসান হওয়ায় তোশিবা করপোরেশনের চেয়ারম্যান শিগেনোরি শিগা সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন।

২০১৫ সালের হিসাব কেলেঙ্কারির ধাক্কা সামলে উঠতে এখনও বেগ পেতে হচ্ছে তোশিবাকে। যুক্তরাষ্ট্রে পরমাণু বিদ্যুৎ ব্যবসার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিকে বড় অঙ্কের এ রাইটডাউন গুনতে হচ্ছে।

তথ্যমতে, তোশিবার যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টিংহাউজ ইলেকট্রিক কোম্পানি ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে শিকাগো ব্রিজ অ্যান্ড আয়রন কোম্পানি (সিবিঅ্যান্ডআই) স্টোন অ্যান্ড ওয়েবস্টার ইনকরপোরেশন কিনে নিয়েছে। গত বছরের ৪ জানুয়ারি এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

সিবিঅ্যান্ডআই পরিচালিত বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর ব্যয় ওয়েস্টিংহাউজ ইলেকট্রিকের হিসাবকে ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণে তোশিবাকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রাইটডাউন করতে হচ্ছে।

রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার চিপ থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জামসহ বহু ব্যবসায় তোশিবার উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু জাপানের এ কোম্পানির সাম্প্রতিক বছরগুলো ভালো যাচ্ছে না। চিপ ব্যবসায় কোরীয় প্রতিযোগী স্যামসাংয়ের সঙ্গে পেরে উঠতে কষ্ট হচ্ছে।

এদিকে আর্থিক হিসাবে কারসাজির কথা স্বীকার করে তোশিবাকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জরিমানা দিতে হয়েছে। টানা কয়েক বছর হিসাব কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ভালো দেখানোর কথা স্বীকার করে কোম্পানিটির শীর্ষস্থানীয় তিন কর্মকর্তাকে বিদায় নিতে হয়েছে। কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ভুল চিত্র দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে বিনিয়োগকারীরা তোশিবার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলা বিচারাধীন রয়েছে। পরমাণু বিদ্যুৎ ব্যবসায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুকি দিতে এর আগেও তোশিবার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা শোনা গেছে। কোম্পানিটির ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ ব্যবসায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বা পুরোটাই বিক্রির প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।