যুগ যুগ ধরে ভুতুড়ে অথচ সুন্দর বলে খ্যাত স্থানগুলো। এসব ভবন কিংবা শহরে বেড়াতে গেলে, এমনকি ছবি দেখার পরেও ভয়ার্ত হয়ে ওঠে মন। গা ছমছম করে। জরাজীর্ণ কিংবা কালজীর্ণ স্থানগুলোই বর্তমানে পর্যটকদের টানছে। দেখে নিন এর কয়েকটি:
টেম্পল অব সান্টিয়াগো
সাড়ে চারশ বছরের পুরোনো মেক্সিকান চার্চ এটি। একসময়ে এখানে পানি বলতে কিছুই ছিল না, খরাক্রান্ত ছিল পুরো এলাকা। সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়ে চার্চটির চারপাশে কোনো এক অজানা কারণে পানি ছাড়া আর কিছুই নেই। পরিস্থিতি এমনই যে, চার্চটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সান্টিয়াগোর শহরের কর্তৃপক্ষ।
রোজ আইল্যান্ড
ভারতের দক্ষিণ আন্দামানে এর অবস্থান। ব্রিটিশ শাসনামলে এখানে পোর্ট ব্লেয়ারের রাজধানী ছিল। বলা হয়, এখানে ওই সময়ে বন্দিদের এনে নির্যাতন করা হতো। সেই থেকে রোজ আইল্যান্ড পরিত্যক্ত হয়ে আছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে বোঝা যায় এখানে একসময়ে অনেক স্থাপনা ছিল। সৌন্দর্যের টানে এখানে অনেকে বেড়াতে আসেন।
সিক্স ফ্লাগস
২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনার কবলে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স অঙ্গরাজ্যের এই থিম পার্কটি। দূষিত ও লবণজলে তলিয়ে যায় স্থানটি। ব্যয়ের দিকটি বিবেচনা করে এখানকার কোনো স্থাপনার সংস্কার করা হয়নি। বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয়, ধ্বংসস্তূপের থিম পার্ক এটি।
হিরটা
স্কটল্যান্ডের একটি দ্বীপ। একসময়ে এখানে অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তির বাস ছিল। তবে তাদের বেশিরভাগই মদ্যপ ছিল। ১৯৩০ সালে ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। অনাহারে থাকে অনেক মানুষ। এছাড়া এখানকার আবহাওয়া বেশ রূঢ় প্রকৃতির। এখন এখানে শুধুই পাথরের কিছু কাঠামো দেখা যায়।
কোলমানস্কোপ
১৯০৮ সালে নামিবিয়ার নামিব মরুভূমিতে এই শহরটির খোঁজ পাওয়া যায়। ওই সময়ে একজন যাযাবর এখানে কিছু ডায়মন্ড পেয়েছিলেন। সেই থেকে এ শহরে বিশেষত লোভী, চোর ও জোচ্চরদের আনাগোনা বেড়ে যায়। অরক্ষিত হয়ে পড়ে শহরটি। কয়েক দশকের মধ্যে এখানকার সব সম্পদ লুট হয়ে যায়। ফলে ১৯৫৪ সালে শহরটি নিঃশেষিত হয়ে পড়ে। লোকজন পালিয়ে যায় শহর ছেড়ে। এখানে বর্তমানে বালিতে ঢাকা কয়েকটি ভবনের দেখা মেলে।
কায়াকোয়
তুরস্কের পরিত্যক্ত শহর এটি। ১৯২০ সাল থেকেই এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে এখানে। গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের রাজনৈতিক বন্দি বিনিময়ের সময়ে এই শহরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বর্তমানে এখানে ৩৫০টি অব্যবহৃত বাড়ি রয়েছে।
অ্যালারহেইলিগেন মোনাস্ট্রি
জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্টে এর অবস্থান। চার্চটি ১১৯২ সালে নির্মাণ করা হয়। বজ্রপাত ও আগুনে পুড়ে তিনবার ধ্বংস হয় এটি। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি চার্চটির।
টা ফ্রোম টেম্পল
কম্পোডিয়ার অ্যাঙ্কর ওয়াটের একটি বিখ্যাত মন্দির ছিল এটি। ১৭ শতকে এটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ফলে ঘন বনজঙ্গলে ঢেকে গেছে। বর্তমানে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বোডিয়ান ক্যাসল
যুক্তরাজ্যের ইস্ক সাসেক্সে পরিখাবেষ্টিত এই দুর্গটি নির্মাণ করা হয় চতুর্দশ শতকে। শতবর্ষের যুদ্ধের ফ্রান্সের ওপর নজরদারিত্ব বাড়ানোর জন্য এটি গড়ে তোলা হয়েছিল। তবে অল্প কয়েক বছর টিকে থাকে দুর্গটি। পরে হারিয়ে যায় ইতিহাসের অতল গহ্বরে। বর্তমানে এখানে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটে।
ইয়াহু অবলম্বনে
রতন কুমার দাস