নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। এর পেছনে নারীর অবদান অপরিসীম। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর অবদান বড় ভূমিকা রাখছে। তৈরি পোশাক খাতসহ আরও অনেক বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মীরা তো কাজ করছেনই, সেইসঙ্গে পরিচালক ও মালিক হিসেবেও নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এটা আমাদের বড় অর্জন। এ অগ্রগতি আমাদের এগিয়ে নিতে হবে।
গতকাল ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িং বাংলাদেশের (আইডব্লিউবি) উদ্যোগে নারীর কাজের স্বীকৃতি, উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নারী শীর্ষক জুম ওয়েবিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
ওই আলোচনা সভায় আইডব্লিউবির নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসনের সভাপতিত্বে অতিথি আলোচক ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ক্যামেলিয়া খান, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজের সহকারী সার্জন ডাক্তার জান্নাতুন নাঈম ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিন বিভাগের প্রভাষক তানিয়া সুলতান। সঞ্চালনা করেন শান্তনু বিশ্বাস।
দেবরা ইফরইমসন বলেন, পরিবার, সমাজ ও দেশের উন্নয়নে নারীরা প্রায় সমানভাবে অবদান রাখছেন। কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতা, নারীকে অবজ্ঞা, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন এবং নারীর গৃহস্থালি কাজ পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি না দেয়ায় নারীর অগ্রগতি ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে।
অধ্যাপক ক্যামেলিয়া খান বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বাড়াতে রাষ্ট্রের সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীকে যুক্ত করতে রাষ্ট্রের আইন ও কর্মপন্থা ঘোষণা এবং বাস্তবায়ন করা দরকার। নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা থেকে বিরত রাখতে তাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন এবং সমাজের মানুষের কাছে খাটো করে ও নারীর প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করে এমন সব বিজ্ঞাপন প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
জান্নাতুন নাঈম বলেন, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন না করা, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিজ কর্মক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে গণমাধ্যমের সহায়তায় প্রচার ও প্রচারনা শুরু করা উচিত। নারীর ক্ষমতায়ন ও মর্যাদায়নের বিষয়টি পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নারীর গৃহস্থালি কাজকে রাষ্ট্রের জাতীয় আয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
তানিয়া সুলতান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অন্যতম প্রতিপাদ্য হলো কাউকে পেছনে ফেলে রাখা যাবে না। এসডিজি জোরদার ও সফল করে তুলতে সবার একত্রিত চেষ্টা ও পরিবর্তনের মনোভাব থাকা দরকার। তা না হলে, লিঙ্গবৈষম্য দূর করা এবং নারীর ক্ষমতায়ন করার ব্যাপারটি মোটেও খুব একটা সহজ কাজ হবে না। তাই পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীর কাজকে মূল্যায়নের জন্য বিশেষ করে এই সমতা ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে।