পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সীমান্ত খুলল মালয়েশিয়া

শেয়ার বিজ ডেস্ক: পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী, বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দিল মালয়েশিয়া। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর: ব্লুমবার্গ।

গত মাসের শুরুতে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী ১ এপ্রিল থেকে পর্যটকদের জন্য সীমান্ত পুরোপুরি খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশটির সংসদ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব এ ঘোষণা দেন।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন দেশের যেসব পর্যটক মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করবেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়া থাকলে আর বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না। মালয়েশিয়ানদেরও বিশ্বের অনুমোদিত যে কোনো দেশে ভ্রমণেও বাধা থাকবে না বলেও জানান তিনি।

করোনার প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের মার্চ থেকে বিদেশিদের মালয়েশিয়া প্রবেশে সীমান্তে বিধিনিষেধ জারি করা হয়। টানা দুই বছর পর সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল দেশটি। গত দুই বছর ধরে বন্ধ ছিল সীমান্ত দিয়ে বিদেশি কর্মী প্রবেশের প্রক্রিয়াও। প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশ টিকাগ্রহণকারী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন তুলে নিয়েছে।

অবশ্য এর আগে ১ মার্চ থেকে মালয়েশিয়ার সীমান্ত পুরোপুরি খুলে দেয়া ও পর্যটকদের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন তুলে নেয়ার সুপারিশ করেছিল দেশটির করোনাভাইরাস রিকভারি কাউন্সিল (এনআরসি)। অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারে কাউন্সিল এমন সুপারিশ করে।

নতুন ঘোষণার ফলে পর্যটকরা কোনো ধরনের কোয়ারেন্টাইন ছাড়া দেশটিতে ভ্রমণ করছেন। করোনার প্রকোপ কমে আসায় দেশটির কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বিদেশি পর্যটকদের ৪৮ ঘণ্টর মধ্যে পিসিআর পরীক্ষায় করোনার নেগেটিভ রেজাল্ট দেখাতে হবে। এখন থেকে নাগরিকরা একে অন্যের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন। বিদেশি শ্রমিকের ঘাটতিও কমবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।

মালয়েশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, গত শুক্রবার ১১৯টি ফ্লাইট বিভিন্ন দেশ থেকে পৌঁছানোর কথা। কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর দেশটির সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর। এদিন সেখানে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কাতার, তুরস্ক ও যুক্তরাজ্য থেকে ফ্লাইট যাওয়ার কথা ছিল। দেশটির পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতিমন্ত্রী দাতুক সেরি ন্যান্সি শুকরি বলেন, কভিড-১৯ মহামারির কারণে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি পার করার পর আমরা এই মুহূর্তটির জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছিলাম। এটি আমাদের ঈদ উৎসবের মতো।

এছাড়া মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে স্থল সীমান্ত পুরোপুরি খুলে দেয়া হয়েছে। এদিন হাজার মানুষকে সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়। দুই দেশের এ সীমান্তকে অন্যতম ব্যস্ত বলে জানান ব্লুমবার্গের বিশ্লেষকরা। সীমান্ত খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিঙ্গাপুরের উডল্যান্ডস চেকপয়েন্ট দিয়ে মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের জোহর প্রদেশে প্রবেশের জন্য যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। পাশাপাশি টুয়াস চেকপয়েন্ট হয়েও মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের হাজার পর্যটক গাড়ি, মোটরসাইকেল ও হেঁটে সীমান্ত অতিক্রম করেন এদিন। দ্য স্ট্রেইটস টাইমস ও চ্যানেল নিউজ এশিয়া বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ জানায়, সকাল সাড়ে ৭টার আগেই অনেকে সীমান্তে পৌঁছান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে তারা সীমান্তে জড়ো হন।

ব্লুমবার্গ জানায়, জহোর প্রদেশের জহোর বাহরুরে বর্তমান আবহাওয়া বেশ মনোরম। আতশবাজি ফুটিয়ে ও ‘আবার সুস্বাগতম’ প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে সিঙ্গাপুরের পর্যটকদের স্বাগত জানায় শহরটি। সিঙ্গাপুরের ইমিগ্রেশন ও চেকপয়েন্টস অথরিটি জানায়, প্রথম দিন প্রায় ১১ হাজার পর্যটক মালয়েশিয়ায় বেড়াতে গেছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ সংখ্যা চার লাখ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কভিড মহামারির আগে দিনে তিন লাখের বেশি মানুষ এ সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করতেন, যা সীমান্তটিকে ব্যস্ত হিসেবে তকমা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আবার আকৃষ্ট হবেন পর্যটকরা। চাঙা হবে দুই দেশের পর্যটননির্ভর অর্থনীতি। মালয়েশিয়ার মিনিস্ট্রি অব টুরিজম, আর্টস অ্যান্ড কালচার জানায়, ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুর থেকে একই পর্যটক একাধিকবার মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেন। এ হিসেবে প্রায় এক কোটিবারের বেশি মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছেন তারা, ২০২০ সালে যা নামে ১৫ লাখে। এরপর বন্ধ করে দেয়া হয় সীমান্ত।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০